সংক্রমণ, মৃত্যু, সুস্থ - তিন সূচকেই বিভাগে শীর্ষে ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দারা বিভাগের মধ্যে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু এবং সংক্রমণের পর সুস্থ হওয়ার দিক থেকেও বিভাগে শীর্ষে এই জেলা। নানা পদক্ষেপের পরও সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকানো যায়নি। অবশ্য, সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি কিছুটা স্বস্তি এনেছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে বিভাগে নতুন ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার ১৭ জন। বর্তমানে বিভাগে মোট ২ হাজার ৮৪৭ জন এবং ময়মনসিংহ জেলায় করোনা শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ৬১৩। অর্থাৎ বিভাগে মোট শনাক্ত ব্যক্তির প্রায় ৫৭ শতাংশই ময়মনসিংহ জেলার।

ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলার ৩৫ উপজেলার সব কটিতেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। জেলাভিত্তিক হিসেবে ময়মনসিংহের পরে অবস্থান জামালপুরের। এই জেলায় এ পর্যন্ত ৫৪২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া নেত্রকোনায় ৪৫৭ ও শেরপুরে ২৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

সিভিল সার্জন এ বি এম মসিউল আলম বলেন, ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটছে সদর উপজেলায়। এখানে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৯২৭ জন, যা জেলার মোট সংখ্যার ৫৭ শতাংশ। এ ছাড়া ভালুকায় ২১৯, ঈশ্বরগঞ্জে ৭০, ত্রিশালে ৬৭, ফুলপুরে ৫১, গফরগাঁও উপজেলায় ৫০, ধোবাউড়ায় ৪৭, হালুয়াঘাটে ৩১ জন করোনায় সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগের করোনা রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১৭৮ জন। তাঁদের মধ্যে ৫৮৭ জনই ময়মনসিংহ জেলার। এ ছাড়া নেত্রকোনার ২৩৪, জামালপুরের ২২৬ ও শেরপুরের ১৩১ জন সুস্থ হয়েছেন। অবশ্য, সুস্থতার শতাংশ বিবেচনায় বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলা পিছিয়ে। বিভাগে করোনা রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার প্রায় ৪১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। সুস্থতার শতাংশ বিবেচনায় বিভাগের মধ্যে শেরপুর এগিয়ে রয়েছে। এখানে সুস্থতার হার ৫৫ শতাংশ। এ ছাড়া নেত্রকোনায় ৫১ ও জামালপুরে ৪১ শতাংশ করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। সে তুলনায় ময়মনসিংহ জেলায় সুস্থতার হার মাত্র ৩৬ শতাংশ।

বিভাগে করোনায় সংক্রমিত হয়ে এ পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলারই ১৯ জন। এ ছাড়া জামালপুরে ৮ জন মারা গেছেন। আর নেত্রকোনা ও শেরপুরে ৩ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন।

করোনা পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়মিতভাবে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।