চিকিৎসককে বান্দরবানে পাঠানোর হুমকি দিয়ে কারাগারে আ.লীগ নেতা

ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে শনিবার কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের মারধরের হুমকি ও অশোভন আচরণের অভিযোগ ওঠে। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দণ্ড পাওয়া ব্যক্তির নাম আবু হায়দার (৪২)। তিনি উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা ১১টার দিকে আবু হায়দার মারপিটের ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তিনি ওই ব্যক্তিকে অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে জরুরি বিভাগের এক নারী চিকিৎসককে চাপ দেন। কিন্তু ওই চিকিৎসক রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সময় দিতে অনুরোধ করেন। এতে আবু হায়দার ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এর একপর্যায়ে ওই নারী চিকিৎসককে বান্দরবানে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। পরিস্থিতি শান্ত করতে হাসপাতালের এক উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা এগিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গেও অশোভন আচরণ শুরু করেন আবু হায়দার। পরে ঘটনাস্থলে আসেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি কী ঘটেছে, তা জানতে চান। তখন আবু হায়দার তাঁর সঙ্গেও একই ধরনের আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি মেরে আসাদুজ্জামানের হা-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন।

পরে আসাদুজ্জামান বিষয়টি মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল করিমকে জানান। ইউএনও দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে আসেন। তিনি নিজ চোখে আওয়ামী লীগের নেতা আবু হায়দারের আচরণ প্রত্যক্ষ করেন। এ ছাড়া উপস্থিত লোকজনের কাছ থেকে ঘটনা জানেন। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আবু হায়দারকে সাত দিনের বিনা শ্রম কারাদণ্ড দেন।

ইউএনও আবদুল করিম বলেন, করোনার এই দুর্যোগের সময়ে চিকিৎসকেরা রাতদিন কাজ করছেন। এমন সময়ে কেউ তাঁদের বদলি বা মারধরের হুমকি দেবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া হয়েছে।

হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিরুজ্জামান বলেন, আবু হায়দারকে শনিবার বিকেলে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।