নওগাঁয় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আটক

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় জেবা খাতুন (১৮) নামের এক তরুণীকে কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার পাড়ইল ইউনিয়নের ধানশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার ঘটনায় জেবা খাতুনের স্বামী সালাহ উদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও জেবা খাতুনের স্বজনেরা জানান, নিয়ামতপুর উপজেলার ধানশা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের মেয়ে জেবা খাতুনের সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে সালাহ উদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পারিবারিক কলহের জেরে গত সোমবার জেবার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান তাঁর স্বামী সালাহ উদ্দিন। ওই দিনই জেবা বাবার বাড়ি নিয়ামতপুর উপজেলার ধানশা গ্রামে চলে আসেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সালাহ উদ্দিনও শ্বশুরবাড়িতে আসেন। রাতের খাবার খেয়ে তাঁরা দুজন একই ঘরে ঘুমাতে যান। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁদের ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে জেবার মা–বাবা সেখানে ছুটে যান। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। ভেতরে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান সালাহ উদ্দিন জেবার বুকের ওপর উঠে কাঁচি দিয়ে গলায় আঘাত করে চলেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় জেবাকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।

জেবার বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই সালাহ উদ্দিন যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে চাপ দিয়ে আসছিল। মেয়ের সুখের জন্য বিভিন্ন সময় অল্প অল্প করে প্রায় এক লাখ টাকা দিয়েছি মেয়েজামাইকে। আরও টাকা দাবি করলে এবং আমার মেয়ে সেই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোমবার সালাহ উদ্দিন তাঁর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। ওই দিনই আমি মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। সালাহ উদ্দিনও গতকাল আমার বাড়িতে আসে। ভেবেছিলাম তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব হয়তো কেটে গেছে। কিন্তু এই রকম নির্মমভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করবে, এটা আমরা কল্পনাতেই ভাবিনি। আমি এর বিচার চাই।’

নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, জেবার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যে কাঁচি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, সেই কাঁচিসহ হত্যার অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরে প্রস্তুতি চলছে। আটক সালাহ উদ্দিনকে থানাহাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজকেই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।