কুয়েতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘাড়ে ঘুষের দায় চাপালেন সাংসদ পাপুল

শহিদ ইসলাম
শহিদ ইসলাম

কুয়েতে আটক সাংসদ শহিদ ইসলাম (পাপুল) দাবি করছেন, সরকারি নিয়মকানুন মেনে দরপত্রের মাধ্যমে তিনি কাজ পেয়েছিলেন। সেই কাজগুলোতে ৯ হাজার কর্মীকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কুয়েতের সরকারি কর্মকর্তারা তাঁর কাছ থেকে টাকা চেয়ে বসেন। আর ব্যবসা করতে হলে সরকারি কর্মকর্তাদের টাকা দিতেই হবে। নিরুপায় হয়ে তিনি কুয়েতের সরকারি কর্মকর্তাদের টাকা দিয়েছিলেন। 

কুয়েতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শহিদ ইসলাম সেখানকার তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই বলেছেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আরবি দৈনিক আল কাবাস ও ইংরেজি দৈনিক আরব টাইমস বুধবার এ কথা জানায়।
আল কাবাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক বাংলাদেশের সাংসদ কুয়েতের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে নিজেকে বারবার নির্দোষ দাবি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা মানব পাচার, অবৈধ মুদ্রা পাচার ও ঘুষ দেওয়ার অভিযোগের সব কটিই তিনি অস্বীকার করেছেন। কুয়েতের কর্মকর্তাদের যে তিনি নগদ ও ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে ঘুষ দিয়েছেন, সেটার প্রমাণ তদন্ত কর্মকর্তারা পেয়েছেন। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি এক মেজর জেনারেল বরখাস্ত হয়েছেন। আটক হয়েছেন ওই জেনারেলের সচিব। সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন সরকারের জনশক্তি কর্তৃপক্ষের এক পরিচালক। কুয়েতের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে লেনদেনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শহিদ ইসলাম তাঁদের ওপর দায় চাপিয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তাদের জেরার মুখে শহিদ ইসলাম জানান, পুরোপুরি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়ে তিনি ৯ হাজার কর্মী নিয়োগ করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন সব যন্ত্রপাতি ছিল, যা কুয়েতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের ছিল না। ফলে তাঁর প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব ছিল। তাই সরকারি সংস্থাগুলো তাঁর প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছিলেন। কিন্তু এতে বাদ সাধেন কিছু সরকারি কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তারা শহিদ ইসলামের কাছে টাকা চেয়ে বসেন। আর টাকা না দিলে তিনি ব্যবসা করতে পারবেন না। ফলে তিনি বাধ্য হয়েই তাঁদের টাকা দেন।
শহিদ ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও তিনি বলেন, কুয়েতের সরকারি কর্মকর্তারা কিন্তু নির্দোষ নন।