পাটগ্রামে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যু

লালমনিরহাটরে পাটগ্রাম উপজেলায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে এই প্রথম একজন মারা গেছেন। ওই ব্যক্তির নাম শামসুল আলম (৬০)। গতকাল শুক্রবার রাতে ১১টা ১০ মিনিটে পাটগ্রাম পৌরসভার জুম্মাপাড়ার নিজস্ব বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থা তিনি মারা যান। শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরূপ পাল।

মৃত শামসুল আলম পাটগ্রাম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও পাটগ্রাম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শামসুল আলম দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ফুসফুস ও হৃদ্‌রোগের জটিলতা। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) নমুনা পরীক্ষায় তাঁর করোনা ‘পজিটিভ’ ধরা পড়ে। এরপর থেকে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শুক্রবার রাতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ১১টার দিকে তিনি তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতেই মারা যান।

শনিবার সকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন। তাঁর আগে বেলা ১১টার দিকে পাটগ্রাম তারকনাথ (টিএন) স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে গ্রামের বাড়ি উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ঘোনাবাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরূপ পাল বলেন, পাটগ্রামে করোনায় সংক্রমিত হয়ে এটাই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। এখন পর্যন্ত উপজেলায় ৫২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচজন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৪৬ জন।

এদিকে পাটগ্রামে দিন দিন করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলায় শুক্রবার ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা এক দিনের হিসেবে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সরকারি গাড়িচালকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের পাঁচজন কর্মী রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও কোভিড-১৯ ফোকাল পারসন কে এম তানজির আলম।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৫ জুন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো নমুনা পাঠানো হয়েছিল। সেগুলো পরীক্ষার পর শুক্রবার প্রতিবেদন আসে। তাতে একজন পুরোনো (ফলোআপ) রোগীসহ মোট ১৯ জনের প্রতিবেদন করোনা ‘পজিটিভ’ এসেছে। তাঁদের বাড়ি উপজেলার পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে।

উপজেলায় এ পর্যন্ত ৪০৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৩ জনের প্রতিবেদন এসেছে। এর মধ্যে ৫২ জনের প্রতিবেদন করোনা ‘পজিটিভ’ এসেছে। এর মধ্যে পুরুষ ৪২ জন ও নারী ১০ জন। এ পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ ঘোষিত হয়েছেন পাঁচজন।