নিহত প্রকৌশলীর স্ত্রীকে কর্মচারীর হুমকি

প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন।
প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন খুনের পর আতঙ্কে আছে তাঁর পরিবার। তাদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই হুমকি দিয়েছেন সিটি করপোরেশনেরই এক কর্মচারী। তিনি নিহত প্রকৌশলীর স্ত্রীকে বলেছেন, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তার বাইরে আর কারও নাম যেন প্রকাশ না হয়। নিহতের স্ত্রী এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কিন্তু পুলিশ তেমন গুরুত্ব দেয়নি।

গত ১১ মে উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন (৫০) খুন হন। তুরাগ থানার পুলিশ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দেলোয়ারের সহকর্মী সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম, করপোরেশনের গাড়িচালক মো. হাবীব এবং শাহীনুর রহমান নামের এক পেশাদার খুনিকে গ্রেপ্তার করেছে। এঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনই কারাগারে আছেন।

দেলোয়ারের স্ত্রী খোদেজা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী খুন হওয়ার পর বিভিন্ন ব্যক্তি তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছিল। এ ঘটনায় গত ১০ জুন তিনি মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ডায়েরিতে তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া গত ৪ জুন তাঁকে মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে টিভিতে দেখাচ্ছে, এর বাইরে আর কারও নাম যেন প্রকাশ না করেন।’ ওই জিডির সঙ্গে তিনি কিবরিয়ার মুঠোফোন নম্বরও দেন।

 হুমকির ব্যাপারে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, দেলোয়ার হত্যার পর তিনি দুবার তাঁর বাসায় গিয়েছিলেন। একবার একা গিয়েছিলেন। কিন্তু হুমকি দেননি।

বাসায় কেন গিয়েছিলেন প্রশ্ন করা হলে কিবরিয়া বলেন, ‘সেটা আপনাকে বলতে হবে কেন?’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমও তাঁর সাফাই গেয়ে বললেন, হয়তো মামলা ভিন্ন খাতে যাতে না যায়, সে জন্য তিনি এমন কথা বলেছেন।

খোদেজা আক্তার বলেন, থানার ডিউটি অফিসার জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে রইসউদ্দিন নামের একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) নাম লিখে দেন। কিন্তু জিডি করার পরও পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছে না।

জানতে চাইলে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মিরপুর থানার এসআই রইসউদ্দিন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি তদন্ত করতে পারেননি। আর মিরপুর থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেছেন, খোদেজার বাসায় পুলিশি পাহারা দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।