কোভিডে চুয়াডাঙ্গার দুজনের মৃত্যু

ছবি রয়টার্স
ছবি রয়টার্স

চুয়াডাঙ্গার এক নারীসহ দুজন কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ঢাকার দুটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা গতকাল শনিবার মারা যান। গতকাল রাতে তাঁদের মরদেহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ এলাকায় দাফন-সমাধি করা হয়েছে।

মৃত দুজন হলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মালোপাড়ার বাসিন্দা আরা হালদার (৫২) ও দামুড়হুদা উপজেলার পুড়াপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী মালিতার স্ত্রী জাহেদা খাতুন (৬৫)। প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা এবং তাঁদের সংস্পর্শে আশা আত্মীয়স্বজনের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শামীম কবির জানান, পৌর এলাকার মালোপাড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত হালদারের ছেলে আরা হালদার মাস খানেক আগে কিডনির সমস্যা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন এবং গতকাল মারা যান। আরা হালদারের সংস্পর্শে থাকা স্ত্রী ও এক ভগ্নিপতিকে সদর হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম জানান, আরা হালদারের মৃতদেহ ঢাকা থেকে সরাসরি গতকাল রাত ১০টার দিকে পৌর মহাশ্মশানে নেওয়া হয় এবং সেখানে কোভিড-১৯ প্রটোকল মেনে সমাধি দেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

পুড়াপাড়া গ্রামের জাহেদা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে ছেলে ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল হান্নানের গ্রিন রোডের বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। আব্দুল হান্নান জানান, তাঁর মা একজন মৃগী রোগী। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তিনি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত ৩০ জুন তাঁকে (জাহেদা) সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) ভর্তি করা হয়। সেখানে ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড-১৯ পজিটিভ নিশ্চিত হন। সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকালে তিনি মারা যান।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল জানান, জাহেদা খাতুনের মৃতদেহ কোভিড-১৯ প্রটোকল মেনে রাতেই পুড়াপাড়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে। মৃত ওই নারীর সংস্পর্শে থাকা স্বজনদের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ২ হাজার ২৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ২ হাজার ৮৩ জনের ফলাফল পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে ২৩৯ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ। এ পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন। জেলার জীবননগর পৌরসভার চারটি ও দর্শনা পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড এবং আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের হাড়োকান্দি গ্রামকে ‘লাল এলাকা’ (রেডজোন) চিহ্নিত করে সেখানে পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার প্রথম আলোকে জানান, গতকাল মারা যাওয়া দুজনেরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ঢাকায় এবং সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাই তাঁদের হিসাব ঢাকার সঙ্গে যোগ হবে।