শেরপুরে কোভিডের ৮৪ শতাংশ রোগী সুস্থ

প্রতীকী ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

শেরপুরে আরও এক স্বাস্থ্যকর্মীর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তিনি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চরশেরপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী নাজির হোসেন (৫২)। তাঁকে নিয়ে তিন মাসে জেলায় কোভিডে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৫০। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২১০ জন। আর তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত হিসাবে সুস্থ হওয়ার হার ৮৪ শতাংশ।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব থেকে পাঠানো প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আজ রোববার সকালে জেলার সিভিল সার্জন এ কে এম আনওয়ারুর রউফ এসব তথ্য জানান।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল জেলায় প্রথম দুই নারীর কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। ৫ জুলাই পর্যন্ত তিন মাসে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৯৬টি। পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৩ হাজার ৬৩৪টি। পরীক্ষায় ২৫০ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শেরপুর সদরে ১০৩, নকলায় ৪৭, নালিতাবাড়ীতে ৫৩, ঝিনাইগাতীতে ২৫ ও শ্রীবরদী উপজেলায় ২২ জন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নয়জন চিকিৎসকসহ ৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী আর ২৬ জন পুলিশ সদস্য। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই বাসায় আইসোলেশনে (বিচ্ছিন্ন) থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এই তিন মাসে সুস্থ হয়েছেন ২১০ জন।

জেলায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরুর দিকে জেলা সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আলমগীর মোস্তাক আহাম্মদ করোনায় সংক্রমিত হন। বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নেন তিনি। সুস্থ হয়ে পুনরায় কর্মস্থলে ফিরে আসেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ নিঃসন্দেহে একটি প্রাণঘাতী রোগ। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে একেবারেই ভয় নয়, সচেতন হতে হবে। মনোবল অটুট রাখতে হবে। সাহসের সঙ্গে এ রোগকে মোকাবিলা করতে হবে। আইসোলেশনে থাকাকালে সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে লবণ-পানি দিয়ে নিয়ম করে গড়গড়া করা, ঘন ঘন লেবু-পানি খাওয়া, সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকা, ঘন ঘন হাত ধোয়া, আর হাত যেন নাকে-চোখে না চলে যায়, সেদিকে সতর্ক থাকা। তবেই দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।

কোভিড-১৯ থেকে সদ্য সুস্থ হওয়া শহরের বাগরাকসা এলাকার তানভির অনীক বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে তাঁর বাবা মারা গেছেন। এরপর তিনিসহ তাঁর দুই বোন ও খালা করোনায় সংক্রমিত হন। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের চার সদস্য একসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ায় কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রতিবেশীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় তাঁরা সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

সিভিল সার্জন আনওয়ারুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, ঈদুল ফিতরের পর লকডাউন শিথিল করায় জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছিল। তবে এখন কমে এসেছে। চলতি মাসের চার দিনে পাঁচজনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হিসেবে জেলায় সুস্থ হওয়ার হার ৮৪ শতাংশ। এটি আশাব্যঞ্জক। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ প্রদানসহ সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হয়। কারও জটিলতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের আইসোলেশনে স্থানান্তর করা হয়। ফলে, সুস্থ হওয়ার হার বেশি বলে জানান তিনি।