ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোভিডে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নিতে যাওয়া কোভিডে আক্রান্ত সন্ধ্যা রানী (৬০) নামের এক স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।

সন্ধ্যা রানী নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রামের মৃত সচিন্দ্র সরকারের স্ত্রী। তিনি উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন।

নিহত সন্ধ্যা রানীর পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার জেলার বেসরকারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন সন্ধ্যা রানী। শনিবারই তাঁর নমুনার ফলাফল পজিটিভ বলে সেখান থেকে জানানো হয়। আজ রোববার সকালে তাঁর বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। সকাল সোয়া সাতটার দিকে পরিবারের লোকজন তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু পরিবারের লোকজন কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার তথ্যটি চিকিৎসকের কাছে গোপন রাখেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা রানীকে করোনায় সংক্রমিত সন্দেহে করোনা আইসোলেশন কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটে পাঠান। সেখান নেওয়ার পরপরই সন্ধ্যা রানীর মৃত্যু হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর লাশ স্বজনেরা নিয়ে যান।

নিহত সন্ধ্যা রানীর স্বজন স্বপ্না সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘৮-১০দিন ধরেই তিনি জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও বুকের ব্যথায় ভুগছিলেন। অসুস্থতার জন্য তিনি শহরের মধ্যপাড়ায় আত্মীয়ের বাসায় চলে আসেন। আজ সকালে শ্বাসকষ্ট হঠাৎ বেড়ে গেলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মির্জা মো. সাইফ প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ৭টা ২০মিনিটে ওই রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসেন। তাঁর শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা ছিল। তাঁকে হাসপাতালের পেয়িং বেড ওয়ার্ডে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তখনো স্বজনেরা কেউ বলেননি যে ওই রোগী কোভিডে আক্রান্ত। আর দীর্ঘদিন ধরেই ওই রোগী হৃদ্‌রোগের ওষুধ সেবন করছিলেন। কোভিডে আক্রান্তের বিষয়টি পরিবারের লোকজন পেয়িং বেডে জানিয়েছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোগী ও তাঁর স্বজনেরা করোনা আক্রান্তের তথ্য গোপন করেছিলেন। আমাদের তাঁরা জানাননি যে ওই নারী কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতাল থেকে করোনার আইসোলেশন কেন্দ্র নার্সিং ইনস্টিটিউটে নেওয়ার সময় ওই রোগী মারা যান।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুব দুঃখজনক। তথ্য গোপন করলে আমরা চিকিৎসা দেব কীভাবে। কেউ কোভিডে আক্রান্ত হলে বিষয়টি জানানো উচিত। কারণ, হাসপাতালে আমাদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন।’