মাদারীপুরে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও ৩৯ জনের কোভিড শনাক্ত

মাদারীপুরে দিন দিন বেড়েই চলেছে করোনার (কোভিড-১৯) সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এক জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার, স্বাস্থ্যকর্মীসহ আরও ৩৯ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭১। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১৩ জন। আজ রোববার বিকেলে সিভিল সার্জন কার্যালয় প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, ১ ও ২ জুলাই জেলার যেসব ব্যক্তি করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়েছিলেন, আজ তাঁদের প্রতিবেদন আসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। ২৭৫ জনের আসা প্রতিবেদনের মধ্যে ৩৯ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২২ জন শনাক্ত হয়েছেন সদর উপজেলায়। এর মধ্যে জেলার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আবির হোসেনসহ তিন পুলিশ সদস্য ও সদর হাসপাতালের একজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এ নিয়ে সদর উপজেলায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলেন মোট ৩১৫ জন, যা জেলার মধ্যে উপজেলা হিসেবে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা শনাক্ত।

এ ছাড়া শিবচরে উপজেলায় নতুন করে আটজন কোভিডে শনাক্ত হয়েছেন এদিন। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্যকর্মী ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একজন কর্মচারী রয়েছেন। শিবচরে এ নিয়ে কোভিডে আক্রান্ত হলেন মোট ১৩৭ জন। এদিকে রাজৈর উপজেলায় নতুন করে ৫ জনসহ এই উপজেলায় মোট শনাক্ত হলেন ২৭৩ জন এবং কালকিনি উপজেলায় নতুন ৪ জনসহ মোট আক্রান্ত হলেন ১৫৬ জন।

করোনার সংক্রমণ জেলায় বাড়তে থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোনো তৎপরতা। করোনার হার বিবেচনায় জোনভিত্তিক লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও জেলার কোথাও নেই কার্যকর লকডাউন। জেলার হাট-বাজারগুলোতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। সব ধরনের দোকানপাট, হাট-বাজার ও প্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে না মানায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ সম্পর্কে জেলার সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য আঞ্জুমান জুলিয়া প্রথম আলোকে বলেন, করোনার হার বিবেচনায় জোনভিত্তিক লকডাউন করে কোনো লাভ হয়নি। সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছেই। কারণ, করোনা প্রতিরোধ করতে প্রশাসন মাঠে আছে নামেমাত্র। পুলিশের টহলও নেই। হাট-বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুলিশ ও প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকায় সংক্রমণ কমে আসছে না। নাগরিক সুরক্ষায় প্রশাসনের উচিত কঠোর ভূমিকা পালন করা।

জানতে চাইলে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জোনভিত্তিক লকডাউন করা হলে সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব। আমাদের জেলায় গত ১৮ জুন থেকে জোনভিত্তিক লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের ১ সপ্তাহ আগে রোগী ছিল ৫৭ জন। আর লকডাউনের ১ সপ্তাহ পরে রোগী হয় ২১ জন। অতএব জোনভিত্তিক লকডাউন সঠিকভাবে করা হলে সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব। আমরা নতুন করে এবার গ্রাম, ওয়ার্ড ও মহল্লাভিত্তিক লকডাউন করতে কাজ শুরু করেছি। দু-এক দিনের মধ্যে আমরা ওই স্থানগুলোর নাম প্রকাশ করব। আশা করছি, এভাবে জেলায় সংক্রমণ কমে আসবে।’