নওগাঁয় কোভিড রোগীদের ৭০ শতাংশ সুস্থ

নওগাঁয় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার বেশ ভালো। আজ রোববার ১ দিনে ৪৪ জন কোভিড-১৯ রোগীকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৯৪ জন। যা মোট আক্রান্তের ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় এ পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্তের হিসাবে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

জেলায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ২৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৫৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছেন ৫৬০ জন। মারা গেছেন সাতজন।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল নওগাঁয় প্রথম একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ২৬ মে, অর্থাৎ ৩৪ দিনের ব্যবধানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়ায়। তখন সুস্থতার হার ছিল ৫১ শতাংশ। ১৩ জুন জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। তখন করোনা রোগীদের সুস্থতার হার ছিল ৬২ দশমিক ৩২ শতাংশ। গতকাল শনিবার পর্যন্ত জেলায় ৫৬০ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৯৪ জন। শতাংশের হিসাবে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৭০ দশমিক ৩২।

জেলার ১১ উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত সদর উপজেলায় ২৩২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। যা মোট আক্রান্তের ৪১ দশমিক ৪২ শতাংশ।

নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, সুস্থ হওয়া ৩৯৪ রোগীর মধ্যে ৩১৮ জনই বাড়িতে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী তাঁদের নিজেদের বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়েছেন। বাকি রোগীরা নওগাঁয় স্থাপিত আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের দিক থেকে রোগীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া, সার্বক্ষণিক ফলোআপ করা, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশের জটিল কোনো উপসর্গ না থাকা এবং তুলনামূলকভাবে এ জেলায় বয়স্ক ও শিশুরা কম আক্রান্ত হওয়ায় করোনা রোগীরা দ্রুত সেরে উঠছেন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সুস্থ হয়ে ওঠা বেশ কয়েকজন রোগী ও চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত হলে কোনো প্রকার ভয় বা গুজবে কান দিয়ে মনোবল দৃঢ় করতে হবে। জটিল কোনো উপসর্গ দেখা না দিলে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করলে বাড়িতে থেকেই কোভিড-১৯ রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোমিনুল হক বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোভিড-১৯ রোগীর মধ্যে জটিল কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। এসব রোগী মনোবল দৃঢ় করে নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ হয়ে উঠবেন। জটিল কোনো উপসর্গ দেখা না দিলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

নওগাঁর সিভিল সার্জন আকন্দ মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হতে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। আক্রান্তের লক্ষণগুলোর মাত্রা, বয়স ও রোগীর অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর নির্ভর করে তাঁদের সেরে উঠতে কত সময় লাগবে। আক্রান্ত রোগীদের সেরে উঠতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে আশার কথা হচ্ছে, নওগাঁয় করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীর মধ্যে দেখা দেওয়া লক্ষণগুলো হালকা ধরনের। ফলে তাঁরা দ্রুত সেরে উঠছেন। শুরুতে করোনা রোগীর সেরে ওঠার হার কম থাকলেও এখন দ্রুত সেরে ওঠার প্রবণতা বাড়ছে।