মুরাদনগরে সাংবাদিক পেটানোর মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানের জামিন

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সমকাল–এর প্রতিনিধি শরিফুল আলম চৌধুরীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় জামিন পেয়েছেন দারোরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। আজ রোববার দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগরের ভার্চ্যুয়াল কোর্টের (আমলি আদালত-১১) জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাহবুব হাসান ওই জামিনের আদেশ দেন। শাহজাহানের আইনজীবী ও মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে শরিফুল আলম চৌধুরী এবং চেয়ারম্যানের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর থেকে চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে খবর প্রকাশ করেন শরিফুল। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে একদল লোক কাজিয়াতল গ্রামে শরিফুলের বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর ঘরে ঢুকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির উঠানে নিয়ে আসে। এরপর দা দিয়ে মাথায় কোপ মারে। একপর্যায়ে লোহার পাইপ ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ও হাত ভেঙে দেয়। এ সময় শরিফুলের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন চৌধুরীর ডান হাতে কোপ দেয়। তাঁর মা ফরিদা বেগমকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এই সময় চেয়ারম্যান বাহিনীর ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।

হামলাকারীরা চলে গেলে এলাকার লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে শরিফুলের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। এ ঘটনায় শরিফুল আলম চৌধুরীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক আবদুল মতিন চৌধুরী মুরাদনগর থানায় চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে সাতজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই দিন বিকেলে দারোরা বাজার কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান মতিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ রোববার তাঁকে আদালতে নেওয়া হয়। এরপর শুনানি শেষে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

চেয়ারম্যানের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, মামলার এজাহার জামিনযোগ্য ধারায় ছিল। ১ নম্বর আসামি চেয়ারম্যান শাহজাহানের বিরুদ্ধে এজাহারে কিছু নেই। তাই তিনি জামিন পেয়েছেন।

শরিফুল আলম চৌধুরী বলেন, শাহজাহান একজন অত্যাচারী চেয়ারম্যান। তাঁর অত্যাচারে ইউনিয়নের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য এই অতর্কিত হামলা। তিনি বলেন, ‘আমার বৃদ্ধ বাবা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে তিনি কী লিখেছেন জানি না। আসামি জামিন পেয়েছে বলে শুনেছেন।’

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মনজুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদালত চেয়ারম্যানকে জামিন দিয়েছেন। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।