৯৯৯-এ কল, ট্রেন থামিয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে নেওয়া হলো হাসপাতালে

ট্রেনযাত্রী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রসবব্যথা শুরু হলে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কলা করা হয়। নাটোর স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি ফুটফুটে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। ছবি: প্রথম আলো
ট্রেনযাত্রী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রসবব্যথা শুরু হলে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কলা করা হয়। নাটোর স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি ফুটফুটে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। ছবি: প্রথম আলো

রোববার দিবাগত রাত পৌনে দুইটা। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি গন্তব্যে ছুটছে। ট্রেনের যাত্রী কামরুন্নাহারের (৩২) প্রসবব্যথা ওঠে। তাঁর সঙ্গে থাকা স্বামী নাছির মোল্লা তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। অবশেষে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল করেন। যাত্রাবিরতি না থাকলেও ট্রেনটিকে নাটোর রেলস্টেশনে থামতে বলা হয়। ট্রেন পৌঁছানোর আগেই অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে দাঁড়ায় রেলস্টেশনে। ট্রেন আসামাত্র ওই প্রসূতিকে নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত আড়াইটার সময় ফুটফুটে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন কামরুন্নাহার।

কামরুন্নাহারের স্বামী গতকাল সোমবার রাতে নাটোর সদর হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে গত রোববার রাত পৌনে নয়টায় তাঁরা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে করে নওগাঁর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর তাঁর স্ত্রীর প্রসবব্যথা শুরু হয়। সঙ্গে রক্তপাত। চিকিৎসার জন্য ট্রেনে চিকিৎসক খুঁজে পাওয়া যায়নি। ট্রেনের একজন কর্মীকে দিয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করান তিনি। তাঁকে জানানো হয়, ট্রেনটি নাটোর স্টেশনে থামানো হলে তাঁদের জন্য সেখানে অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। তাঁদের সদর হাসপাতালে নেওয়া হবে। ৯৯৯ নম্বরের সেবায় তিনি মুগ্ধ।

নাটোর রেলস্টেশনের কর্মকর্তা অশোক চক্রবর্তী বলেন, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের নাটোরে যাত্রাবিরতি ছিল না। তাঁকে ফোন করে ট্রেনটি থামানোর বিষয়ে জানানো হয়। রাত ২টায় ট্রেনটি ওই অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে স্টেশনে এসে দাঁড়ায়। তাৎক্ষণিক তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জাতীয় জরুরি সেবা কার্যক্রমের পরিচালক (অতিরিক্ত ডিআইজি) তবারক উল্লাহ এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নিয়ে এক মা ও তাঁর নবজাতক উপকৃত হওয়ায় তাঁরা আনন্দিত।

নাটোে সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আনছারুল হক বলেন, ওই প্রসূতি মাকে সেবা দেওয়ার জন্য ৯৯৯ নম্বর থেকে আগেই তাদের বলা হয়েছিল। তাই রোগী আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মা ও নবজাতক ছেলে ভালো আছে।