সেই দুই শ্রমিকনেতাকে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ, রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর

অলিয়ার রহমান ও নূর ইসলাম।
অলিয়ার রহমান ও নূর ইসলাম।

পুলিশ ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো খুলনার দুই পাটকলশ্রমিকনেতার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার খুলনা মহানগর হাকিমের ভার্চ্যুয়াল আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে তা নামঞ্জুর হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহিনুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

ওই দুই শ্রমিকনেতা হলেন খুলনার ইস্টার্ন জুট মিলের কর্মী ও পাটশিল্প রক্ষা যুব জোটের আহ্বায়ক অলিয়ার রহমান এবং প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক ও যুব জোটের উপদেষ্টা নূর ইসলাম।

গত রোববার রাতে অলিয়ার রহমানকে খান জাহান আলী থানার মশিয়ালি এলাকার বাসা থেকে ও নূর ইসলামকে নগরের খালিশপুরের বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে তাঁদের পরিবার। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) কানাই লাল সরকার বলেন, একটি মামলার সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে অলিয়ার রহমান ও নূর ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বি এল কলেজ রোডের বিদ্যুৎ অফিসের সামনে থেকে আটক করে দৌলতপুর থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যে মামলায় ওই দুই পাটকলশ্রমিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল পাটকলশ্রমিকদের আন্দোলন চলাকালে নগরের নতুন রাস্তা মোড়ে শ্রমিকেরা পুলিশ ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর চালান। হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। ওই মামলায় পাটকলের দুই শ্রমিকনেতাকে গতকাল বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাটকলের শ্রমিকনেতাদের গ্রেপ্তারে তীব্র নিন্দা ও দ্রুত মুক্তি দাবি জানিয়ে গতকাল সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল–বাসদ খুলনা জেলা শাখার সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো ব্যক্তিমালিকানায় দেওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য শ্রমিকদের সামান্যতম বিরোধিতাকেও দমন করতে উঠেপড়ে লেগেছে। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাটের বিরুদ্ধে, বদলি শ্রমিকসহ সব পাটকলশ্রমিকের ন্যায্য দাবিতে ওই দুজন লড়াই করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সরকারের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবিতে তাঁরা রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। সেই আন্দোলন দমন করার জন্যই রাতের অন্ধকারে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’