জাহালামের ঘটনার পুনরাবৃত্তি সালাম ঢালী: মানবাধিকার কমিশন

মো. আবদুস সালাম ঢালী। সোমবার মুক্তি পাওয়ার পর বাগেরহাট কারাফটকে। ছবি: প্রথম আলো
মো. আবদুস সালাম ঢালী। সোমবার মুক্তি পাওয়ার পর বাগেরহাট কারাফটকে। ছবি: প্রথম আলো

অপরাধ না করেও মো. আবদুস সালাম ঢালী (৫৮) নামের এক ব্যক্তির কারাভোগের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। তিনি বলেছেন, 'নিরপরাধ হয়েও সালাম ঢালী জেল খেটেছেন যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এই ঘটনা জাহালম ঘটনার পুনিরাবৃত্তি।'

নাম ও ঠিকানায় মিল থাকায় অপরাধ না করেও চার মাস সাজা খেটে সালাম ঢালী নামের এক ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বাগেরহাট জেলা কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। 

আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, বিনা অপরাধে জেলে থাকা সালাম ঢালীকে কমিশনের প্যানেল আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি সহায়তা দিয়ে মুক্তির ব্যবস্থা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গণমাধ্যমে 'আসামি না হয়েও জেল খাটছেন খুলনার সালাম ঢালী' শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত আমলে নিয়ে বাগেরহাটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে তার মুক্তির জন্য আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল আদালত সালাম ঢালীকে মুক্তির আদেশ দেন।

বিবৃতিতে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, একের পর এক এধরনের ঘটনা ঘটছে যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সঠিক যাচাই বাছাই না করে নিরপরাধ ব্যক্তিকে আটক রোধে যথোপযুক্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের সতর্ক করার জন্য সরকারের কাছে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের মোংলা থানায় ইলেকট্রনিকস সামগ্রী চুরির একটি মামলায় ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই আবদুস সালাম নামের এক আসামির দুই বছরের সাজা হয়। পলাতক ওই আসামির বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ১১ মার্চ ওই আসামির নিজের নাম ও ঠিকানায় মিল থাকায় ভুল করে খুলনা নগরীর শেখপাড়া এলাকার মফিজ উদ্দিন ঢালীর ছেলে মো. আবদুস সালাম ঢালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রকৃত আসামি হলেন খুলনার শেখপাড়া মেইন রোডের প্রয়াত শফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. আবদুস সালাম।

এর আগে সালাম ঢালীর মতই বিনা দোষে কারাভোগ করেন জাহালাম নামের এক ব্যক্তি। সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনার সব মামলাতেই আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির নাম ছিল। তবে তদন্তে অন্যতম প্রধান আসামি আবু সালেকের পরিবর্তে টাঙ্গাইলের পাটকলশ্রমিক জাহালামের নামে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে জাহালমকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিনা দোষে তিন বছর কারাভোগও করেন তিনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলা থেকে নিরীহ জাহালমকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁকে মুক্তি দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। 

আরও পড়ুন: