কুমিল্লায় তিন মাসে মৃত ১১২, শেষ মাসেই ৭৪

প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স

কুমিল্লা জেলায় প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার তিন মাস পূর্ণ হচ্ছে বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই। সংক্রমণের প্রথম মাসে এ জেলায় ১৫০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, মারা যান ৭ জন। দ্বিতীয় মাসে ১ হাজার ৩৬৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, মারা যান ৩৮ জন। আর তৃতীয় মাসে ২ হাজার ৬৫৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, মারা যান ৭৪ জন। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এ জেলায় সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

কুমিল্লা জেলায় গত তিন মাসে (বুধবার পর্যন্ত) শনাক্ত হওয়া মোট রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ১৬৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১২৪ জন। মারা গেছেন ১১২ জন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নমুনা সংগ্রহ ও প্রতিবেদন নিয়ে ধীরগতি এবং কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ না থাকায় এ জেলায় সংক্রমণ তীব্র হচ্ছে। মারাও যাচ্ছেন বেশি লোক।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, কুমিল্লায় গত ৯ এপ্রিল বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের দুই শিশুর শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ওই দুই শিশুর ৬৫ বছরের দাদি ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর সংস্পর্শে এসে ওই দুই শিশু আক্রান্ত হয়। গত এক মাসে (৮ জুলাই পর্যন্ত) ৯ হাজার ৬৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৬৫৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৬৬ জন। মারা গেছেন ৬৭ জন। দৈনিক গড়ে ৮৮ জন শনাক্ত হয়েছেন।

জানতে চাইলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নমুনা সংগ্রহ, প্রতিবেদন পাওয়া ও করোনা শনাক্তের পর চিকিৎসাসেবা নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার ওপর স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে সংক্রমণ তীব্র হচ্ছে। গত তিন মাসের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কুমিল্লা জেলায় হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী।’

জেলা সিভিল সার্জন মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, কুমিল্লা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে একটি সিটি করপোরেশন ও ১৭টি উপজেলায় ৫৬ লাখের বেশি লোক বাস করে। এখানকার কমিউনিটিতে এটি দ্রুত সংক্রমিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি বেশি নমুনা পরীক্ষা করাতে। সীমিত সম্পদের মধ্যেই আমরা কাজ করছি। আমাদের পিসিআর মেশিন একটি। আরেকটি মেশিন আসার কথা রয়েছে। এটি এলে পরীক্ষা আরও বাড়বে।’

কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালের পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগী বেশি আসে। তাঁরা শেষ সময়ে আসেন। ফলে শত চেষ্টা করেও তাঁদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।