সাহেদের সহযোগী পাঁচ দিনের রিমান্ডে

রিজেন্ট হাসপাতালের ফাইল ছবি
রিজেন্ট হাসপাতালের ফাইল ছবি

করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেওয়াসহ নানা অভিযোগে গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের অন্যতম সহযোগীর পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত শুক্রবার এই আদেশ দেন। এই আসামির নাম তরিকুল ইসলাম।

এর আগে আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ৮ জুল একই মামলায় গ্রেপ্তার আরও সাত আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। আসামিরা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

রিমান্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব, হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব হাসান, হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বনিক, রিজেন্ট গ্রুপের গাড়িচালক আবদুস সালাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশীদ খান।

এর আগে করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেওয়াসহ নানা প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিমকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র‌্যাব। মামলায় পলাতক আছেন সাহেদ করিম।

মামলার আসামিরা হলেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ, রিজেন্ট হাসপাতালের কর্মী তরিকুল ইসলাম, আবদুর রশিদ খান জুয়েল, মো. শিমুল পারভেজ, দীপায়ন বসু, আইটি কর্মকর্তা মাহবুব, সৈকত, পলাশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব (১), হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব (২), হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, অভ্যর্থনাকারী কামরুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক মো. রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বণিক, রিজেন্ট গ্রুপের গাড়িচালক আবদুস সালাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশিদ খান।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালের শাখা দুটির (উত্তরা ও মিরপুর) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশের কথা বলা হয়। পরে দুটি হাসপাতাল সিলগালা করে দেওয়া হয়।
গত সোমবার র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রিজেন্ট হাসপাতালের দুটো শাখায় (উত্তরা ও মিরপুর) অভিযান চালায়। এ সময় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপকসহ আটজনকে আটক করে। এদের মধ্যে একজন কিশোর।

গত সোমবার অভিযান চলার সময় র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তিন ধরনের অভিযোগ ও অপরাধের প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন। প্রথমত, তারা করোনার নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করত। এ ধরনের ১৪টি অভিযোগ র‌্যাবের কাছে জমা পড়ে, যার পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযান। দ্বিতীয়ত, হাসপাতালটির সঙ্গে সরকারের চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার। সরকার এই ব্যয় বহন করবে। কিন্তু তারা রোগীপ্রতি লক্ষাধিক টাকা বিল আদায় করেছে। পাশাপাশি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে এই মর্মে সরকারের কাছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বেশি বিল জমা দেয়। সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল এ পর্যন্ত শ দুয়েক কোভিড রোগীর চিকিৎসা দিয়েছে। রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৃতীয় অপরাধ হলো, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের তারা কোভিড পরীক্ষা করবে বিনা মূল্যে। কিন্তু তারা আইইডিসিআর, আইটিএইচ ও নিপসম থেকে ৪ হাজার ২০০ রোগীর বিনা মূল্যে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে এনেছে।

সারোয়ার আলম জানান, রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স ২০১৪ সালে শেষ হয়ে যায়।। এরপর আর লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।