মতলব দক্ষিণে কমেছে নজরদারি, বেড়েছে কোভিডের সংক্রমণ

কোভিড-১৯
কোভিড-১৯

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকাতে জুন থেকে প্রশাসন, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীদের তৎপরতা ও নজরদারি কমেছে বলে অভিযোগ। লকডাউন ও হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে তেমন তৎপরতা নেই সংশ্লিষ্টদের। বাজার ও লোকালয়ে শারীরিক দূরত্ব না মেনে দেদার চলাফেরা করছেন লোকজন। অনেকে পরছেন না মাস্ক। এ কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যালয় সূত্র জানায়, এপ্রিলে উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১১টি। তাতে একজনেরও কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়নি। মে মাসে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৪৯টি। সেখানে করোনা শনাক্ত হয় ১২ জনের। এর মধ্যে ১২ মে প্রথমবারের মতো তিনজনের শরীরে কোভিডের সংক্রমণ ধরা পড়ে। জুনে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ২৩৮টি। পজিটিভ শনাক্ত হন ৮৯ জন। চলতি জুলাই মাসে গতকাল শনিবার পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৮০ টি। এর মধ্যে ৩১ জনের শরীরে কোভিডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। সব মিলে এপ্রিল থেকে উপজেলায় মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৭৮টি। কোভিড শনাক্ত হয়েছে ১৩২ জনের। এর মধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশ সংক্রমণই হয়েছে জুন ও চলতি জুলাই মাসে।

মতলব সরকারি কলেজের দুজন শিক্ষক মন্তব্য করেন, করোনাকাল শুরুর পর সংক্রমণ ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা অনেক তৎপর ছিলেন। মার্চ ও এপ্রিলে উপজেলায় একজনেরও করোনা শনাক্ত হয়নি। কিন্তু মে মাস থেকে তাঁদের ওই তৎপরতায় কিছুটা ভাটা পড়ে। লকডাউন ও হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বাজার ও লোকালয়ে দিনরাত লোকজন গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ঘোরাফেরা করছেন। শারীরিক দূরত্ব মানার বিষয়টি তোয়াক্কা করছেন না অনেকেই। মাস্ক ছাড়াই রাস্তাঘাটে বের হচ্ছেন লোকজন।

দুই শিক্ষক অভিযোগ করেন, উপসর্গে থাকা লোকজনের অনেকেই নমুনা দিয়ে ও না দিয়েও যখন-তখন যেখানে-সেখানে আড্ডা মারছেন। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও ব্যক্তিদের কার্যকর তৎপরতা নেই। এতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। এসব বন্ধে তদারকি ও নজরদারি না বাড়ালে এখানকার করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার আইচ দাবি করেন, করোনার মহামারি ঠেকাতে পুলিশ অক্লান্ত শ্রম দিচ্ছে। এরপরও সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। সংক্রমণ রোধে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম কাউসারের দাবি, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সম্ভাব্য সবকিছুই করা হচ্ছে। মূলত লোকজনের স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবেই সংক্রমণের হার বাড়ছে।