লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নীলফামারীতে অপরিবর্তিত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী গড্ডিমারী গ্রামের পানিবন্দী বাড়িঘর। গতকাল শনিবার দুপুরে। ছবি: এ বি সফিউল আলম
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী গড্ডিমারী গ্রামের পানিবন্দী বাড়িঘর। গতকাল শনিবার দুপুরে। ছবি: এ বি সফিউল আলম

নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আর লালমনিরহাটে নতুন করে ১৭ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। রোববার দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে।

রোববার সকাল ৬টায় ওই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, সকাল নয়টায় ৩ সেন্টিমিটার কমে ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় আবারও ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত প্রায় ১৫টি চরাঞ্চল অধ্যুষিত গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পরিবারগুলো মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ও রাত ৯টায় ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে ওই পয়েন্টে গত ২৬ জুন তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে এবং টানা তিন দিন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ৪ জুলাই সকালে আবারও পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে এবং সন্ধ্যা ৬টায় পানি কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, শুক্রবার দুপুরের পর থেকে তিস্তায় পানি বাড়লে বন্যা দেখা দেয়। রোববার পর্যন্ত তাঁর ইউনিয়নের এক হাজার ৪০টি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি রোববার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ১২ সেন্টিমিটার এবং দুপুর ১২টায় ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান তিস্তা নদীর পানি বেশ কিছুদিন ধরে ওঠানামা করছে। এখন পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠায় তিস্তা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রোববার দুপুর ১২টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যারাজের সব (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রেখে আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’

লালমনিরহাটে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, লালমনিরহাট জেলায় নতুন করে ১৭ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছে। ত্রাণসহায়তা হিসেবে ১২০ মেট্রিক টন জিআর চাল এবং নগদ অর্থসহায়তা হিসেবে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে রোববার।