চুয়াডাঙ্গায় 'জিন-এক্সপার্ট' দিয়ে হবে করোনা পরীক্ষা

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

চুয়াডাঙ্গায় দ্রুত যক্ষ্মা শনাক্ত করার যন্ত্র ‘জিন-এক্সপার্ট’ দিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষার কথা ভাবছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। কর্মকর্তাদের দাবি, পিসিআর ল্যাবের বিকল্প এই পদ্ধতি রিয়েল টাইম পিসিআর হিসেবে দেশ-বিদেশে বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। কিটের সরবরাহ পেলেই তাঁরা পরীক্ষা শুরু করবেন।

জেলার সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান প্রথম আলোকে জানান, চাহিদা অনুযায়ী কিটের সরবরাহ নিশ্চিত হলে হাতের কাছেই নমুনা পরীক্ষার দ্বার খুলে যাবে। চুয়াডাঙ্গাতেই হবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষা। কুষ্টিয়া, যশোর বা খুলনায় নমুনা পাঠিয়ে অপেক্ষা করতে হবে না। তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতির এই টেস্ট দ্রুত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

জেলা সরকারি বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে নিযুক্ত ব্র্যাকের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) লতিফ তালুকদার জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে গত ২৪ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে এ প্রক্রিয়ায় করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

লতিফ তালুকদার দাবি করেন, যেখানে পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করতে আট ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে জিন-এক্সপার্ট মেশিনে নমুনা প্রক্রিয়াকরণ করতে পাঁচ মিনিট সময় লাগে এবং ৪৫ মিনিটেই ফল পাওয়া যায়। পজিটিভ রোগীর ফলাফল ৩০ মিনিটে পাওয়া সম্ভব। নতুন এই পদ্ধতিতে ভিটিএম টিউব থেকে নমুনা সরাসরি কার্টিজে দেওয়া হয়। এক ধাপে নমুনা পরীক্ষা (টেস্ট) সম্পন্ন হয় এবং সরাসরি কম্পিউটার থেকে ফলাফল পাওয়া যায়।

গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ জেলা প্রতিরোধ কমিটির মতবিনিময় সভায় জেলার সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান জিন-এক্সপার্ট দিয়ে করোনা পরীক্ষার বিষয়টি উপস্থাপন করেন। জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সিভিল সার্জন ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নতুন এই পদ্ধতির সুবিধার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তুলনামূলক কম খরচ ও স্বল্প সময়ে অধিকসংখ্যক পরীক্ষার জন্য জিন-এক্সপার্ট মেশিনটি খুবই কার্যকর। এ পরীক্ষা ক্লিনিক্যাল মূল্যায়নে করোনাভাইরাস পজিটিভ ও নেগেটিভ রোগীর ক্ষেত্রে প্রায় শতভাগ সাফল্য পেয়েছে। জিন-এক্সপার্ট মেশিন ব্যবহার করে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকেও অনুমোদন পাওয়া গেছে।

খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম আশ্বাস দেন, চুয়াডাঙ্গাতে দ্রুততম সময়ে কিট সরবরাহে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান আজ রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে জানান, জেলায় বর্তমানে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি জিন-এক্সপার্ট মেশিন সচল আছে। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নামে নতুন একটি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তবে কোভিড-১৯ হাসপাতাল জেলা সদরে হওয়ায় দামুড়হুদার জন্য বরাদ্দ মেশিনটি সদর হাসপাতালের ল্যাবে নেওয়া হবে। কিটের সরবরাহ পেলেই শুরু হবে করোনা পরীক্ষা।