জামালপুরে ১২ দিনে ১৫১ জনের করোনা শনাক্ত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুরে দ্রুত বাড়ছে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা। চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে ১৫১ জন্য শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে কোভিড–১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১২। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১১ জন।

সামাজিক দূরত্ব বা ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জামালপুরে দিন দিন শনাক্ত ব্যক্তির হার বাড়ছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এখনই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ না করলে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুয়ায়ী, গত ৫ এপ্রিল জেলায় প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়। ৫ এপ্রিল থেকে ১৮ মে পর্যন্ত ৪৪ দিনে জেলায় সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৪। ১৮ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫০। ৮ জুন থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১২। গত ১২ দিনেই সংক্রমিত হয়েছেন ১৫১ জন।

উপজেলার মধ্যে সদরে সংক্রমিতের হার বেশি, ২৮৭ জন। সবচেয়ে কম দেওয়ানগঞ্জে, ৩৭ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৪১ জন। সারা জেলায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৭ হাজার ৫৩৩টি। সব পরীক্ষার প্রতিবেদন এসেছে।

বর্তমানে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ১৯ জন। সংক্রমিত ব্যক্তির বেশির ভাগই চিকিৎসা নিচ্ছেন বাসায়।

জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো স্বাভাবিক জামালপুরের জীবনযাত্রা। বাজার, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন পরিবহনে মানুষের চলাচল এখন আগের মতোই। কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। বেশির ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় লোকজনকে গা–ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে ও বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

গত শুক্রবার দেখা যায়, জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধের দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানুষের ভিড়। অনেকে একসঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। অনেকে আবার ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে গেছেন। অনেকে বন্যার মধ্যে নৌকায় ঘেঁষাঘেঁষি করে ঘুরছেন। ফুচকা-চটপটির দোকানে ভিড়। ফুচকার দোকানি আবদুল করিম জানান, প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধে শত শত মানুষ ঘুরতে আসেন। করোনার প্রথম দিকে তেমন কোনো মানুষ আসতেন না। তবে কিছুদিন থেকে মানুষের ভিড় বাড়ছে। করোনার কারণে দোকানের চেয়ার দূরে দূরে রাখা হয়। কিন্তু ক্রেতারা সবাই একসঙ্গেই বসে পড়েন। এতে তাঁর কী করার আছে।

সেখানে ঘুরতে যাওয়া এক ব্যক্তির নাম ফিরোজ আহম্মেদ। তাঁর মাস্কটি থুতনিতে রাখা। তিনি জানান, করোনা নিয়ে এখন আর কারও মধ্যে ভীতি নেই। শত শত মানুষ ঘুরতে আসছেন। মুখ ঘেমে যাচ্ছিল, তাই থুতনিতে নামিয়ে রেখেছিলেন।

জামালপুরের সিভিল সার্জন প্রণয় কান্তি দাস জানান, করোনায় সংক্রমিতের প্রথম দিকে মানুষের মধ্যে একটি ভীতি কাজ করত। সেই সময় মানুষের মধ্যে সচেতনতাও ব্যাপকভাবে লক্ষ করা গেছে। তবে এখন জামালপুরে মানুষের মধ্যে সচেতনতা একেবারে কমে গেছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি কোথাও মানছেন না মানুষ।