জেকেজি ও সাহেদের দুর্নীতি উদ্ঘাটন করে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকারই: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ (ফাইল ছবি)
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ (ফাইল ছবি)

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনা শনাক্ত ও চিকিৎসা বিষয়ে জেকেজি এবং সাহেদের দুর্নীতি ও প্রতারণা সরকারই উদ্ঘাটন করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এর কোনোটিই পত্রিকার রিপোর্ট বা অন্য কেউ অভিযোগের আঙুল তোলার পরে নয়, সরকার নিজেই এখানে অনিয়ম খতিয়ে দেখার পরিপ্রেক্ষিতেই বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘জেকেজির প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যান—দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মো. সাহেদের দুটি হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে, মামলা হয়েছে। সাহেদকে গ্রেপ্তার করতে পারবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছে। এরপর নানাজনে নানা বক্তব্য দিচ্ছেন, বিএনপিও মুখ খুলছে। কিন্তু এগুলো সরকারই উদ্ঘাটন করেছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এদের সংশ্লিষ্ট করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরও সতর্ক হওয়ার অবশ্যই প্রয়োজনীয়তা ছিল।’

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পৃথিবীতে দেখা দেওয়ার পর থেকেই সরকার দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরপরই মুজিব বর্ষের সব আনুষ্ঠানিকতা ও আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে যা যা করা প্রয়োজন, সবকিছুই সরকার শুরু থেকেই করে এসেছে এবং মানুষের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দিবানিশি কাজ করে এই করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। সরকারের এসব প্রচেষ্টার কারণেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার পৃথিবীতে সর্বনিম্ন দেশগুলোর মধ্যে একটি, ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও আমাদের মৃত্যুহার কম এবং সরকার আরও সুচারুভাবে কাজ করতে চায় বিধায় এই অনিয়ম, দুর্নীতিগুলো উদ্ঘাটন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কখন যে বলে বসেন, সরকারের উদাসীনতার কারণে বানের পানি এসেছে—আমি সেই শঙ্কার মধ্যেই আছি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে এই করোনার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল এবং সেটি সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করার মাধ্যমে কীভাবে মানুষের জানমাল-সম্পদ রক্ষা করা হয়েছে, পুনর্বাসন করা হয়েছে ও কাজ চলছে। বন্যার ক্ষেত্রেও সরকার ইতিমধ্যেই অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে। বিএনপি শুধু ঘরের মধ্যে বসে বসে মায়াকান্না দেখায়, কিন্তু জনগণের জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করে না। তাদের রাজনীতিটা হচ্ছে টেলিভিশন আর সংবাদ সম্মেলনকেন্দ্রিক। এর বাইরে তাদের আর কোনো রাজনীতি নেই।’

এসএসসি পাস মো. সাহেদ কীভাবে পত্রিকার ডিক্লারেশন পেয়েছেন—এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পত্রিকার ডিক্লারেশন ডিসি অফিস থেকে নিতে হয় এবং ডিক্লারেশন পাওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সাহেদ পত্রিকার ডিক্লারেশন নিলেও সেই পত্রিকা বের করেছে কি না, সেটি ডিএফপি (চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর) খতিয়ে দেখছে। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে আমি মনে করি, একজন প্রতারকের হাতে পত্রিকার ডিক্লারেশন থাকবে কি না, সেটি বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।’

অনলাইন সংবাদ পোর্টালের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অনলাইনগুলোর রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার উদ্যোগ এই মার্চ মাসেই নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার কারণে সেটি স্থগিত ছিল। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা শিগগিরই রেজিস্ট্রেশন দেব। আর যেগুলোর বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন এসেছে, সেগুলোর ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’