জামালপুরে প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙে বন্যার পানি বেড়েছে

ইসলামপুর উপজেলার পূর্ব বাবনা গ্রামের সব কিছু তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। ছবিটি আজ মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: আব্দুল আজিজ
ইসলামপুর উপজেলার পূর্ব বাবনা গ্রামের সব কিছু তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। ছবিটি আজ মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: আব্দুল আজিজ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিপাতে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানে প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙে পানি বেড়েছে। দ্বিতীয় দফার এ বন্যায় জামালপুরে দুই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জেলার সাতটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রথম দফার থেকে এখন পর্যন্ত ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফার বন্যায় সাতটি উপজেলার ২৩টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে দুই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ২৩টি চিকিৎসা দল গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান প্রথম আলোকে, পানি বৃদ্ধি প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙেছে। সব জায়গায় এখন পানি। কোথাও শুকনা জায়গা নেই। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটসহ ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন। এসব এলাকায় এখন তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।

বন্যাদুর্গত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা–পরিস্থিতির কারণে এলাকার অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তার সঙ্গে বন্যা যোগ হওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। একই সঙ্গে আবার বন্যায় আক্রান্ত হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। তাঁদের ঘরে পর্যাপ্ত খাবার নেই। অনেকে খাবারের অভাবে চিড়া-মুড়ি খেয়েও থাকছেন। দুর্গত এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র, সেতু ও উঁচু স্থানে যেতে শুরু করেছেন। ঘরবাড়ি বানের পানিতে ভেসে যাওয়ায় অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপের নিয়ন্ত্রক আবদুল মান্নান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য সময়ের থেকে দ্বিতীয় দফায় অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ছে। প্রথম দফার পানি বৃদ্ধির রেকর্ড ভেঙেছে। প্রথম দফার থেকে এখন পর্যন্ত ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো এলাকা এখন বন্যাকবলিত হওয়ার বাকি নেই। সর্বত্রই এখন বানের পানি।