সগিরা মোর্শেদ হত্যা: আসামি মারুফ রেজার জামিন হয়নি

সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট

প্রায় তিন দশক আগে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি মারুফ রেজার জামিন হয়নি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে তাঁর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেছেন।

ওই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ৯ জুন বিফল হন মারুফ রেজা। এরপর তিনি জামিন চেয়ে ৫ জুলাই হাইকোর্টে আবেদন করেন, যা আজ শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে জামিন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আরিফুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ।

পরে মো. বশির উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় চার আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে মারুফ রেজার বিরুদ্ধে অপরাধের সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। হাইকোর্ট মারুফ রেজাকে জামিন না দিয়ে তাঁর আবেদনটি হাইকোর্টের নিয়মিত (আদালত খোলার পর) বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেছেন।

উচ্চ আদালতের আদেশের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আসামিরা হলেন সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজা। এখন মামলাটি অভিযোগ গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের কবলে পড়েন। একপর্যায়ে দৌড় দিলে তাঁকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সগিরা মোর্শেদ মারা যান। সেদিনই রমনা থানায় একটি মামলা করেন তাঁর স্বামী সালাম চৌধুরী। প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। নেওয়া হয় সাতজনের সাক্ষ্য। বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজার নাম আসে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন। পরের বছরের ২৭ আগস্ট অপর এক আদেশে হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। এতে থমকে যায় মামলার কার্যক্রম।
বিষয়টি নজরে এলে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ জুন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ অধিকতর তদন্তের আদেশে এর আগে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন। ফলে মামলাটি গতি পায়। গত বছরের নভেম্বরে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।