লকডাউন ওয়ারী: ১৩ নমুনা পরীক্ষায় ১২ জনই 'পজিটিভ'

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরান ঢাকার ওয়ারীর লকডাউন এলাকায় গত রোববার করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নমুনা দিয়েছিলেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে ১২ জনই কোভিড-১৯ পজিটিভ। মঙ্গলবার এ ফল দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। 

এই এলাকায় সংক্রমণের হার বাড়লেও লকডাউন কঠোর করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) তেমন কোনো তৎপরতা চালাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে । বিভিন্ন অজুহাতে লকডাউন এলাকা থেকে দিনভর লোকজন বের হচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবীদের কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার লকডাউনের ১১ তম দিনে ওয়ারী বালিকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্থায়ী বুথে করোনা পরীক্ষায় নমুন দিয়েছেন আরও ৯ জন। সোমবার যে ১০ জন নমুনা দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাদের ফলাফল দেয়নি আইইডিসিআর। বুধবার তাদের ফল দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ৪ জুলাই ভোর ছয়টা থেকে ওয়ারীর তিনটি সড়ক ও পাঁচটি গলি লকডাউন শুরু হয়। এলাকাগুলোতে এক লাখের বেশি লোকের বাস। করোনা প্রতিরোধে আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত ওয়ারীতে লকডাউন চলবে।
ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত ৪ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত লকডাউন এলাকার ১৬৬ জন করোনা নমুনা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৬ জনই সংক্রমিত হয়েছেন। এরমধ্যে ৮ জুলাই সর্বোচ্চ ২৬ জন নমুনা দিয়েছিলেন; করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১২ জন। গত রোববার নমুনা দিয়েছিলেন ১৩ জন, করোনা পজিটিভ ১২ জনের।
জরুরি প্রয়োজনে ওয়ারী লকডাউন এলাকায় ঢুকতে র‌্যাংকিন স্ট্রিটে ফটক খোলা রাখা হয়েছে। বের হওয়ার জন্য ওয়্যার স্ট্রিটের ফটক রয়েছে। গতকাল সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত এই দুটি ফটক দিয়ে ৪৫৭ জন যাতায়াত করেছেন। তাদের অধিকাংশজনই চিকিৎসার অজুহাত দিয়ে বের হয়েছেন। কিন্তু এই দুটি ফটকে যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন, লোকজনের যাতায়াত আটকাতে ঢিলেঢালাভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
বেলা ১১টার দিকে ওয়্যার স্ট্রিটের ফটক দিয়ে হেঁটে বের হচ্ছিলেন ফয়জুল হক। এ সময় তিনি চিকিৎসার জন্য বের হচ্ছেন বলে স্বেচ্ছাসেবীদের জানান। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবীরা তাকে বাধা দেয়নি, কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন তাও যাচাই করেননি। শুধু ফটকে থাকা একটি খাতায় ফয়জুল হকের নাম-ঠিকানা লিখে রেখেছেন।
জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবী ইমরুল ইসলাম বলেন, নানা অজুহাতে দিনভরই লোকজন বের হন। অনেক সময় যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয় না।
ওয়ারী লকডাউন বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিএসসিসির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান। আলাপকালে তিনি দাবি বলেন, তারা খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে এবং ঢুকতে দিচ্ছে না। কিন্তু তারপরও সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এটি নিয়ে তারাও চিন্তিত। তাই বাকি দিনগুলোতে এই সংক্রমণ কমাতে লকডাউন এলাকায় যাতায়াতে আরও কঠোর হবেন তাঁরা।