নবাবগঞ্জে বিলীন হওয়ার পথে দুই শ পরিবারের বসতভিটা

পদ্মায় পানি বাড়ায় সাদাপুর ও হযরতপুর খালের পাড়ের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার উপক্রম। বুধবার সকালে নবাবগঞ্জের সাদাপুর এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
পদ্মায় পানি বাড়ায় সাদাপুর ও হযরতপুর খালের পাড়ের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার উপক্রম। বুধবার সকালে নবাবগঞ্জের সাদাপুর এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নে পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত সাদাপুর ও হযরতপুর খালে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ওই দুটি খাল পাড়ের দুই শ পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার পথে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদী থেকে আসা পানির স্রোতে খালগুলোর দুই পাড়ের অসংখ্য বসতভিটা বিলীন হচ্ছে।

খালের দুই পাড়ের একাধিক বাসিন্দা জানান, কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা খালে ভাঙন শুধু পরিদর্শনই করে যাচ্ছেন। ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বর্তমানে খালের দুই পাড়ের দুই শ পরিবার তাদের বসতভিটা হারানোর আতঙ্কে রয়েছে।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘নবাবগঞ্জে ভাঙনকবলিত সাদাপুর ও হযরতপুর খালটি আমরা পরিদর্শন করেছি। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে বান্দুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল হক বলেন, গত ৭ বছরে প্রায় ৫০০–এর বেশি বসতবাড়ি খালে বিলীন হয়ে গেছে। তাঁদের অনেকেই এখন পরিবার–পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ কেউ এলাকায় গিয়ে বসবাস করছেন।

খালের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত আমেনা বেগম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে পানির স্রোতে আমার বসতভিটা ভেঙে খালে চলে গেছে। নিজের জমি হারিয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে এখন কোনো রকমে অন্যের জমিতে ঘর তৈরি করে বাস করছি।’

বান্দুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হিল্লাল মিয়া বলেন, পদ্মা নদীর পানি সরাসরি সাদাপুর ও হযরতপুর খালে প্রবেশ করে ইছামতী নদীতে গিয়ে পড়ছে। পদ্মায় পানি বাড়ায় ওই দুই খালে ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করছে। খালের ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তা না হলে সাদাপুর, হযরতপুরসহ আশপাশ এলাকার অসংখ্য মানুষ তাদের বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম সালাউদ্দীন মনজু বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙনকবলিত এলাকা রক্ষায় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।