জামালপুরে পানি বৃদ্ধির রেকর্ড, মানুষের দুর্ভোগ চরমে

বন্যার পানিতে ঘরবাড়িতে গলাসমান পানি। ঘরে থাকা সবকিছু তলিয়ে গেছে। এই দম্পতি ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। সকালে নৌকায় করে ঘরবাড়ি দেখতে আসছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ঢেংগারঘর এলাকায়। ছবি: আব্দুল আজিজ
বন্যার পানিতে ঘরবাড়িতে গলাসমান পানি। ঘরে থাকা সবকিছু তলিয়ে গেছে। এই দম্পতি ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। সকালে নৌকায় করে ঘরবাড়ি দেখতে আসছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ঢেংগারঘর এলাকায়। ছবি: আব্দুল আজিজ

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি দ্বিতীয় দফায় বাড়তে থাকায় সর্বত্র বন্যাকবলিত হয়ে পড়ছে মানুষ। প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙে আজ বৃহস্পতিবার বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চার লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট। সর্বত্র পানি থাকায় নিরাপদ আশ্রয়ও খুঁজে পাচ্ছেন না বন্যার্তরা।

জেলার সড়কে সড়কে পানির স্রোত থাকায় এখন যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ। কেউ কোথাও যাবেন, সে উপায় নেই। ১৯ দিন ধরে পানিতে থেকে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে পানিবাহিত রোগসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু কোথাও চিকিৎসা দলের দেখা নেই। কোথাও সরকারি ব্যবস্থাপনায় উদ্ধারকারী দল খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে দিন যাপন করছেন। সবচেয়ে বড় সংকটে রয়েছেন নারী ও শিশুরা। তাঁদের দুর্ভোগের সীমা নেই। এমন চিত্র দুর্গত প্রায় প্রতিটি গ্রামে।

বানের তোড়ে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও সংসারের টুকিটাকি জিনিসপত্র। সব হারিয়ে দিশেহারা কুলকান্দি ইউনিয়নের বেরকুশা গ্রামের মহিতন বেগম। ছবি: আব্দুল আজিজ
বানের তোড়ে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও সংসারের টুকিটাকি জিনিসপত্র। সব হারিয়ে দিশেহারা কুলকান্দি ইউনিয়নের বেরকুশা গ্রামের মহিতন বেগম। ছবি: আব্দুল আজিজ

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়ন কবলিত হয়েছে। একই সঙ্গে চারটি পৌরসভাও বন্যাকবলিত হয়েছে। ওই ইউনিয়ন ও পৌরসভার ২৭৯টি গ্রামের ৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৬৭ জন পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ইতিমধ্যে ২ হাজার ৮১০ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফায় তিনজন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপ নিয়ন্ত্রক আবদুল মান্নান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য সময়ের থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ছে। ইতিমধ্যে প্রথম দফার পানি বৃদ্ধির রেকর্ড ভেঙেছে। কোনো এলাকা বন্যাকবলিত হতে বাকি নেই। সর্বত্রই এখন বানের পানি।