ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে, শেরপুরে ২০ গ্রাম প্লাবিত

ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের সদর উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে এসব গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। তলিয়ে গেছে বীজতলা ও খেতের আবাদ।

উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার রাত থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে নদসংলগ্ন সদর উপজেলার চর পক্ষীমারী, চর মোচারিয়া ও কামারেরচর ইউনিয়নের ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। সেই সঙ্গে ভোগাই নদীর ঢলের পানি নিম্নাঞ্চলে নেমে আসায় উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

পাউবো, জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, শেরপুর সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র সেতু পয়েন্টে নদের পানি বিপৎসীমার মাত্র ৪৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি আরও বাড়বে।

সদর উপজেলার হরিণধরা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ৫ শতাংশ জমিতে তিনি আমন বীজতলা করেছেন। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গেছে। পানি সরে গেলে সরকার থেকে সহায়তা না দিলে আবাদ করা সম্ভব হবে না।

এই গ্রামের আরেক কৃষক মো. শুক্কিল বলেন, এক একর জমিতে সবজি আবাদ করেছেন। হঠাৎ বন্যায় সব তলিয়ে গেছে। কৃষির ওপরই তাঁর সংসার চলে। তাই সরকারি সাহায্য না পেলে তাঁদের দিন যাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

চর পক্ষীমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আকবর আলী বলেন, বন্যার পানিতে তাঁর ইউনিয়নের কুলুরচর ব্যাপারীপাড়া, নতুন ভাগলগড়, চুনিয়ারচর, টাকিমারী, ডাকপাড়া ও জঙ্গলদী গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

চর পক্ষীমারী ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাফর আলী বলেন, বন্যাকবলিত কুলুরচর ব্যাপারীপাড়া গ্রামের প্রায় দেড় শ পরিবার জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধ ও কুলুরচর ব্যাপারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের ত্রাণসহায়তা প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বন্যায় ১০০ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ও ২০ হেক্টর জমির সবজির আবাদ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।