টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুই ভাই নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজার টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আপন দুই ভাই নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে টেকনাফ উপজেলা সদর ইউনিয়নের চকবাজারে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, নিহত দুজনই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁরা একাধিক মাদক মামলার পলাতক আসামি।

নিহত দুজন হলেন চট্টগ্রামের চন্দনাইশের কাঞ্চন নগরের মৃত হাকিম আলীর ছেলে আমানুল ইসলাম (৩৪) ও আজাদুল হক (২৬)।

পুলিশের ভাষ্য, দুজনের বিরুদ্ধে চারটি করে মাদক মামলা রয়েছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে ২টি এলজি, ১১টি গুলি ও ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি জব্দ করা হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের সময় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মাজাহার, কনস্টেবল দ্বীন ইসলাম ও আমজাদ হোসেন আহত হয়েছেন।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একাধিক মাদক মামলার পলাতক আসামি আমানুল ইসলাম ওরফে মোহাম্মদ ফারুক ও আজাদুল হককে পুলিশের একটি বিশেষ দল মৌলভীপাড়া এলাকা থেকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, তাঁরা টেকনাফে মৌলভীপাড়া এলাকা থেকে ইয়াবা ও অস্ত্র সংগ্রহ করে আসছিলেন। তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাতে পুলিশ তাঁদের নিয়ে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সদর ইউনিয়নের চকবাজার হামিদের বাড়ির পেছনে জমিতে পৌঁছায়। এ সময় তাঁদের সহযোগীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। এতে এএসআই মো. মাজাহার, কনস্টেবল দ্বীন ইসলাম ও আমজাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। তাৎক্ষণিক পুলিশও জীবন রক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় পালাতে গিয়ে ফারুক ও আজাদুল গোলাগুলির মাঝখানে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন।
একপর্যায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঘটনাস্থল থেকে ২টি দেশীয় এলজি, ১১টি গুলি ও ২০ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয় এবং গুলিবিদ্ধ ওই দুই আসামি ও পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুফিয়া আক্তার বলেন, রাতে পুলিশ পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পোশাকে থাকা তিন পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ পোশাকে থাকা দুজনের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ভোররাতে গুলিবিদ্ধ দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৬২ জন নিহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে দুই নারীসহ ১০০ জন রোহিঙ্গা।