জামালপুরে চরম দুর্ভোগে পানিবন্দী মানুষ

যেদিকে চোখ যায় থই থই পানি। বন্যাদুর্গত মানুষেরা নৌকায় করে বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বালুগ্রামে। ছবি: আবদুল আজিজ।
যেদিকে চোখ যায় থই থই পানি। বন্যাদুর্গত মানুষেরা নৌকায় করে বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বালুগ্রামে। ছবি: আবদুল আজিজ।

জামালপুরে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া বন্যার্ত মানুষ অনাহারে-অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্গত এলাকা এখনো জলাবদ্ধ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপ নিয়ন্ত্রক আবদুল মান্নান বলেন, আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি খুব ধীরগতিতে কমছে।

বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বন্যার্ত মানুষ খোলা স্থানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দুর্গত এলাকায় এখন চরম দুর্ভোগ। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া গবাদিপশুর খাদ্যের সংকটও রয়েছে। পানিবাহিত রোগও দেখা দিয়েছে। দুর্গত বেশির ভাগ এলাকায় এখনো ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর খবর পাওয়া যায়নি।

বন্যার পানিতে পথঘাট তলিয়ে গেছে। নৌকাই একমাত্র ভরসা বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের। বৃহস্পতিবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বালুগ্রামে। ছবি: আবদুল আজিজ।
বন্যার পানিতে পথঘাট তলিয়ে গেছে। নৌকাই একমাত্র ভরসা বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের। বৃহস্পতিবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বালুগ্রামে। ছবি: আবদুল আজিজ।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফার বন্যায় সাতটি উপজেলার ৪৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। একই সঙ্গে চারটি পৌরসভাও বন্যাকবলিত হয়েছে। ওই ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪৯০টি গ্রামের ৫ লাখ ৯৮ হাজার ২১৭ জন মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার ৮১০ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানিতে ডুবে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হলো।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, বন্যার্ত মানুষের জন্য ইতিমধ্যে জেলায় ৩১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিশুখাদ্যের জন্য ২ লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব দুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে যাবে।