ফিরে এসে দেখেন লাশটি তাঁর ভাইয়ের

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

রাস্তার পাশে ডোবার কিনারে লাশ পড়ে থাকতে দেখেও পুলিশি ঝামেলার ভয়ে চলে যান আনোয়ার মোল্লা। বাড়ি গিয়ে জানতে পারেন, ছোট ভাই সুন্নাত মোল্লা রাতে রিকশা নিয়ে বের হয়ে তখনো ফেরেননি। এরপর আবার ডোবার কাছে ফিরে যান আনোয়ার। গিয়ে দেখেন, লাশটি তাঁরই ভাই সুন্নাতের। তাঁকে হত্যা করে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা।

আজ শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌর এলাকায়। সুন্নাত (৫৫) তেনাপচা গ্রামের মৃত আকবর আলী মোল্লার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা একটার দিকে স্থানীয় লোকজন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পূর্ব পাশে তেনাপচা ডাইভারশন সড়কের বিপরীতে এ এ এ ইটভাটার কাছে মরা পদ্মার ডোবার কিনারে অর্ধডুবন্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পান। তাঁরা থানায় খবর দেন। পুলিশ বেলা দুইটার দিকে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় তাঁর গলায় লাল রঙের গামছা প্যাঁচানো ছিল। মাথার বাঁ পাশে ধারালো চাপাতির কোপের চিহ্নও ছিল। লাশের পাশেই পড়ে ছিল ধারালো চাপাতি। পরে আনোয়ার মোল্লা গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন। এ সময় তিনি লাশ জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আনোয়ার মোল্লা জানান, সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় দুই দিন আগে সুন্নাত নতুন রিকশাটি কেনেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার পর তিনি বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হন। এরপর আর ফেরেননি। তাঁর সঙ্গে বিশেষ কারও শত্রুতা নেই। কী কারণে সুন্নাতকে হত্যা করা হয়েছে, তিনি বুঝতে পারছেন না।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, সুন্নাত মোল্লা খুব সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। তিনি ঘটনার কারণ উদ্‌ঘাটন করে অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেন।

জানতে চাইলে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান আজ রাত ১০টার দিকে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা প্রথমে ওই ব্যক্তির গলায় গামছা দিয়ে শ্বাস রোধ করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। রিকশাটি দুর্বৃত্তরা নিয়ে যেতে পারে। তবে একটি রিকশার জন্য এভাবে হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার ঘটনায় পরিবার থেকে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।