মরুর 'সাম্মাম' ফল এখন আত্রাইয়ে

নওগাঁর আত্রাইয়ে রেজাউলের সাম্মাম ফলের বাগান। সম্প্রতি উপজেলার মিরাপুর গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো
নওগাঁর আত্রাইয়ে রেজাউলের সাম্মাম ফলের বাগান। সম্প্রতি উপজেলার মিরাপুর গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

মরু অঞ্চলের ফল ‘সাম্মাম’ চাষ শুরু হয়েছে নওগাঁর আত্রাইয়ে। সাম্মাম চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন আত্রাই উপজেলার মিরাপুর গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম। সৌদি আরব থেকে বীজ সংগ্রহ করে দেড় বিঘা পতিত জমিতে দুই জাতের সাম্মাম চাষ করে প্রায় এক টন ফল উৎপাদন করেছেন তিনি।

সাম্মাম সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল। ইতিমধ্যে সাম্মাম এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এক জাতের সাম্মামের বাইরের অংশ সবুজ আর ভেতরে লাল। আরেক জাতের সাম্মামের বাইরের অংশ হলুদ আর ভেতরে লাল। তবে দুটি ফলই খেতে মিষ্টি, সুস্বাদু ও সুগন্ধযুক্ত।

এলাকায় নতুন জাতের এই ফলের চাষ হওয়ায় রেজাউল ইসলামের সাম্মাম খেত দেখতে আসছেন আশপাশের গ্রামের কৃষকেরা। কেউ কেউ সাম্মাম চাষের পরামর্শও নিচ্ছেন রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে।
সৌদি আরব থেকে বীজ সংগ্রহ করে প্রায় দেড় বিঘা জমিতে দুই ধরনের সাম্মামের বীজ বপন করেন রেজাউল ইসলাম। দেড় মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যেই পরিপক্ব হয় সাম্মাম। নতুন জাতের হওয়ায় অনেকেই রসাল ফলটি কিনছেন।

কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, সাম্মাম ফলের তেমন একটা রোগবালাই নেই, গাছে খুব সামান্য সার ও কীটনাশক দিতে হয়। পতিত দেড় বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো সাম্মাম চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। প্রথম বছরে জমিতে প্রায় এক মেট্রিক টন ফল উৎপাদন হয়েছে। একেকটি সাম্মাম ফল দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের হয়। প্রতি কেজি ফল পাইকারি দেড় শ এবং খুচরা দুই থেকে আড়াই শ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

রেজাউল ইসলাম জানান, সাম্মাম চাষে ছেলে সোহানুরসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও তাঁকে সহায়তা করছেন। তিনি বলেন, তরমুজ জাতের সাম্মাম ফল উৎপাদনে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। বীজ বপন থেকে পরিচর্যার ওপর গুরুত্ব দিতে হয়েছে। এ ছাড়া সময়মতো জৈব সার দেওয়া হয়। এভাবে তিন মাস যেতে না যেতেই সাম্মাম পরিপক্ব ফলে রূপ নেয়। এই ফলের বেশ চাহিদা রয়েছে। নতুন জাতের এই ফল চাষ করলে সবাই লাভবান হবেন বলে তিনি মনে করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাউছার হোসেন বলেন, রেজাউল ইসলাম একজন আদর্শ কৃষক। তিনি সব সময় নতুন নতুন কৃষিপণ্য চাষে আগ্রহী। তরমুজের মতো অনেকটা সংকর জাতের এই ফলের গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। ফলনও বেশ ভালো। রেজাউলকে আশপাশের অনেকেই সাম্মাম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা কাউছার হোসেন।