তারাগঞ্জ এখন করোনামুক্ত যেভাবে

ছবি রয়টার্স
ছবি রয়টার্স

রংপুরের তারাগঞ্জে গত ১৭ দিনে নতুন করে কেউ কোভিড–১৯ রোগে আক্রান্ত হয়নি। এ উপজেলায় আক্রান্ত ২৯ জনের মধ্যে ২৫ জনই নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তফা জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি দাবি করেছে, কঠোরভাবে কোভিড–১৯ রোগীর আইসোলেশন নিশ্চিত করায় নতুন করে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল তারাগঞ্জ স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে দুজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ উপজেলায় প্রথম তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন। পরে পর্যায়ক্রমে উপজেলায় মোট ২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৩৩ জনের। তবে ১ জুলাইয়ের পর নতুন কেউ কোভিড–১৯ রোগে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়নি। ১ জুলাই থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সবগুলোর ফলাফলই ‘নেগেটিভ’ এসেছে। এই সাফল্যের পেছনে কয়েকটি উদ্যোগকে এগিয়ে রাখতে চান প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা। বিশেষ করে নমুনা দেওয়ার দিন থেকে সেরে ওঠার দিন পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে পারার বিষয়টিকে বড় পদক্ষেপ বলে তাঁরা মনে করছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকে মাঠে কাজ করছেন ইউএনও ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি লকডাউনের পর ওই গ্রামের লোকদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে যাতে ঘরের বাইরে বের হতে না হয়, সে জন্য প্রয়োজনী ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। গ্রামে ঘুরে ঘুরে দুস্থদের ঘরেও তাঁরা চাল, ডাল দিয়েছেন। এসব কারণে করোনার সংক্রমণ এখানে কমে এসেছে।

নিজ বাড়িতে থেকে সুস্থ হওয়া নারায়ণজন গ্রামের সোহেল রানা বলেন, ‘কোনো কিছুর জন্য ঘরের বাইরে যেতে হয়নি। ইউএনও ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্যার ওষুধ, খাবার ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। সরাসরি ও মুঠোফোনে খোঁজখবর নিয়ে সাহস দিয়েছেন।’

ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরুর দিক থেকে সবার সহযোগিতা পাচ্ছি। বিশেষ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সব সময় সহযোগিতা করেছেন। পরামর্শ দিয়েছেন। সবার সহযোগিতায় কাজ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, ১ জুলাইয়ের পর কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি। আক্রান্ত ২৯ জনের মধ্যে ২৫ জনই নিজ বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। তাঁরা ঘরে ঘরে গিয়ে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। বাইরে থেকে কেউ এলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিয়েছেন। সবার সহযোগিতায় এখন তারাগঞ্জ করোনামুক্ত।