সন্তান না হওয়ায় প্রাণই দিতে হলো গৃহবধূকে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বিয়ে হয়েছে আট বছর। কিন্তু সন্তান হয় না। এ জন্য স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত মারধর করতেন স্বামী। শেষ পর্যন্ত স্বামীর নির্যাতনেই মরতে হলো তাঁকে। এ অভিযোগ প্রতিবেশী ও মেয়েটির বাবার বাড়ির লোকজনের। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতাও পেয়েছে। গতকাল রোববার রাতে স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চরআড়িয়ারা গ্রামের। গৃহবধূ মনিরা বেগম (২৫) একই গ্রামের হাবিব মৃধার (৩২) স্ত্রী। তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি গ্রামের দাউদ সরদারের মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, মনিরার সন্তান হয় না বলে নানা ছুতোয় প্রায়ই হাবিব তাঁকে মারধর ও মানসিক নির্যাতন করতেন। নির্মম নির্যাতন সহ্য করেও মনিরা মুখ বুজে সংসার করছিলেন। সন্তানের আকাঙ্ক্ষায় দুই মাস আগে আরেকটি বিয়ে করেন হাবিব। এরপর মনিরার ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। গতকাল সকালে বাড়ির ঘরের মধ্যে আটকে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন হাবিব। এরপর তিনি বাড়ির বাইরে চলে যান। তখন থেকে দুপুর পর্যন্ত বিছানায় পড়ে ছিলেন মনিরা। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁর বাবার বাড়ির দুজন লোক এসে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি দেখে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, গৃহবধূ মনিরার শরীরে আঘাতের দাগ আছে। গতকাল রাতেই হাবিবকে আটক করা হয়েছে। সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ওসি বলেন, হাবিব বিয়ের এক বছর পর থেকেই স্ত্রীকে মারধর করে আসছেন, সেটি তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তিনি এও স্বীকার করেছেন, সন্তান না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে অশান্তি ও কলহ ছিল। তবে তিনি দাবি করেন, ঘটনার দিন সকালে তিনি বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। এসে স্ত্রীকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন।