গাইবান্ধায় এখনো পানিবন্দী সোয়া লাখ মানুষ
ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। প্লাবিত হয়ে আছে নদের তীরবর্তী গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দী।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানিও আরও ১০ সেন্টিমিটার করে কমেছে। পানি কমলেও আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সকাল ছয়টায় করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ সকালে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, জেলার সব কটি নদীর পানি কমে যাচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এদিকে বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে নদীভাঙনে ফুলছড়ি উপজেলার চরকাবিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝানঝাইড় কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কালাসোনা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দপুর উচ্চবিদ্যালয়য়ের স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিদ্যালয় চারটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে ফুলছড়ি উপজেলার জিগাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চৌমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পাউবোর গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় জরুরিভাবে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘরে এখনো হাঁটু থেকে কোমরপানি থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে সেখানকার বাসিন্দারা। বন্যার পানি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ও ফজলুপুর ইউনিয়নের চরগুলোর পানিবন্দী মানুষেরা চরম দুর্ভোগে রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর অগভীর নলকূপ ডুবে গেছে। এতে এ এলাকাগুলোয় বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছে। এ কারণে অনেক এলাকায় পেটের পীড়া ও আমাশয় দেখা দিয়েছে। অনেকের হাতে ও পায়ে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন এ বি এম আবু হানিফ প্রথম আলোকে জানান, বন্যাপরবর্তী রোগব্যাধি নিয়ন্ত্রণে জেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় ৬১টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। কোনো সমস্যা হবে না।