সাহেদসহ রিজেন্টের ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

মো.সাহেদ করিম। ছবি: ফেসবুক
মো.সাহেদ করিম। ছবি: ফেসবুক

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে এনআরবি ব্যাংকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে কমিশনের অনুসন্ধানে অর্থ আত্মসাতের অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

মামলায় আসামিরা হচ্ছেন রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইব্রাহিম খলিল, এনআরবি ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার (এসই ব্যাংকিং) মো. সোহানুর রহমান ও একই ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, (এসই ব্যাংকিং) ওয়াহিদ বিন আহমেদ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে এনআরবি ব্যাংক থেকে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সুদসহ ১ কোটি ৫১ লাখ ৮১ হাজার ৩৬৫ টাকা আত্মসাৎ করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য আজ মঙ্গলবার বিকেলে চার অর্থ আত্মসাতকারীর বিরুদ্ধে কমিশনের মামলা দায়েরের সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান।

আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, রিজেন্ট হাসপাতালের চলতি হিসাবটি খোলার সময় গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো টাকা জমা গ্রহণ করা হয়নি। মো. সাহেদ এনআরবি ব্যাংকের একজন নতুন গ্রাহক। তিনি ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর ব্যাংক হিসাবটি খোলেন। কিন্তু হিসাব খোলার এক দিন আগেই ব্যাংকের দুই কর্মকর্ত মো. সোহানুর রহমান ও ওয়াহিদ বিন আহমেদ সাহেদের জন্য এসএমই ব্যাংকিং ঋণ মঞ্জুরির সুপারিশ পাঠান। ঋণ মঞ্জুরির আগ পর্যন্ত ওই হিসাবে কোনো লেনদেন ছিল না। মো. সাহেদের হাসপাতাল ব্যবসার পূর্ব অভিজ্ঞতাও ছিল না। অন্য কোনো ব্যাংকে বা অন্য কোনো ব্যবসায় সাহেদের কোন ধরনের বিনিয়োগ বা লেনদেন ছিল, সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি। এমনকি ঋণের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত জামানত গ্রহণ করা হয়নি। ঋণ বিতরণের পূর্বে বা পরে যথাযথ তদারকি করা হয়নি।

অভিযোগে বলা হয়, ঋণের মঞ্জুরিপত্রের শর্তানুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা হয়নি। মো. সাহেদ রিজেন্ট হাসপতাল থেকে ঋণ মঞ্জুরীপত্রের শর্তানুযায়ী এফডিআর করেছিলেন। পরবর্তীতে সাহেদ ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক এফডিআর ক্লোজ করে ঋণ সমন্বয় করেন। এতে দেখা যায়, মো. সাহেদ স্বেচ্ছায় কখনও ঋণের টাকা পরিশোধ করেননি। তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের জন্য ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের জন্য দুই পর্বে দুই কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরি নিশ্চিত হয়ে এক কোটি টাকা এফডিআর করেন। সাহেদসহ অন্যারা একে অপরের যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এনআরবি ব্যাংক থেকে দুই পর্বে ঋণ রিসিডিউলসহ দুই কোটি ৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৮৭ টাকা ঋণ নিয়েছেন। ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৬৫ লাখ ৭৯ হাজার ২২৭ টাকা সুদসহ আনুষাঙ্গিক চার্জ ধার্য করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সাহেদের এফডিআর থেকে এক কোটি ১৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪৯ টাকা সমন্বয় করার পর সুদসহ অবশিষ্ট ব্যাংকের এক কোটি ৫১ লাখ ৮১ হাজার ৩৬৫ টাকা আত্মসাতের অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

সাংবাদিকদের জানােনো হয়, দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. সিরাজুল হক বাদি হয়ে শিগগির মামলাটি দায়ের করবেন।