চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গা জেলায় এক দিনে সর্বোচ্চ ৪৬ জন নতুন করে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৪৪৬। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকাতেই রয়েছে ১৫৫, যা মোট আক্রান্তের ৩৫ শতাংশ। আজ মঙ্গলবার সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান এই তথ্য জানিয়েছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কোভিড-১৯ জেলা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৪, ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে লকডাউন ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার। সভায় মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকেই লকডাউন কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

কোভিড-১৯ জেলা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভার শুরুতে সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান জেলার করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জেলায় ২০ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪৪৬ জন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২৩ জন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি হওয়ায় ওই তিনটি ওয়ার্ডে তিনি লকডাউন দেওয়ার প্রস্তাব করেন। সভায় উপস্থিত কমিটির সদস্যরা সিভিল সার্জনের প্রস্তাবকে সমর্থন জানান।

জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার লকডাউন ঘোষণার পর রোগীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জন্য কিছু নির্দেশনা উপস্থাপন করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, কোভিড-১৯ রোগীকে আইসোলেশনে এবং ওই রোগীর পরিবারের সদস্যদের বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। লকডাউন ঘোষিত এলাকায় প্রসাধনসামগ্রী ও কাপড়ের দোকান এবং শপিংমল বন্ধ রাখতে হবে। তবে নিত্যপণ্যের দোকানগুলো সকাল ছয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাস্কবিহীন কারও কাছে পণ্য বিক্রি করলে দোকান সিলগালা এবং ক্রেতা-বিক্রেতাকে জরিমানা করা হবে। লকডাউন বাস্তবায়নে ওয়ার্ডভিত্তিক গঠিত কমিটি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে।

সভা চলাকালে কমিটির উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্যবিভাগ ও সেনাবাহিনী প্রথম থেকে কাজ করলেও আমাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে করোনা বেড়ে যাচ্ছে। মানুষকে লকডাউনসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে যত কঠোর হওয়ার প্রয়োজন, হতে হবে।’

প্রতিরোধ কমিটির ওই সভায় চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, জেলা পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৮৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। আজ মঙ্গলবার তাঁদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলের প্রতিবেদন এসে পৌঁছে। ওই প্রতিবেদনে ৪৬ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন।