আ.লীগ নেতা খুন: সরাইলে যুবলীগের সেই আংশিক কমিটি বিলুপ্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা সদরে পূর্ববিরোধের জের ধরে আওয়ামী লীগের নেতা আবু বকর সিদ্দিক খুনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা যুবলীগের সেই আংশিক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। গতকাল মঙ্গলবার যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত সরাইল উপজেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।’

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম আজ বুধবার মুঠোফোনে সরাইল উপজেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৩ মার্চ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শাহানুর ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সরাইল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শের আলম মিয়াকে ওই পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

পূর্ববিরোধের জের ধরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাতটার দিকে উপজেলা শহরের প্রাতবাজর এলাকায় নিজ বিপণিবিতানের সামনে আবু বকর সিদ্দিককে কুড়াল ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এবং দেহ থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে এক দল কিশোর-যুবক। আবু বকর সিদ্দিক ছিলেন উপজেলা সদরের ব্যাপারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি সরাইল সদর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন।

এ ঘটনার পরের দিন আবু বকরের বড় ছেলে শাহ নেওয়াজ বাদী হয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) শের আলম মিয়াসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার অভিযোগপত্রে (চার্জশিটে) উপজেলা যুবলীগ কমিটির (সদ্য বিলুপ্ত) সভাপতিকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ৭ জুলাই জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল হক আদালতে ওই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তাতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আইনজীবী আশরাফ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শের আলম মিয়াসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে শের আলম মিয়া পলাতক।

২০১৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর আশরাফ উদ্দিনকে সভাপতি ও শের আলম মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের সরাইল উপজেলা যুবলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছিল জেলা কমিটি। ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব ছিল এই আংশিক কমিটির ওপর। সাড়ে পাঁচ বছরেও উপজেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।