এবার 'আলীরাজ' ৩০ মণের

ব্রাহামা জাতের এই ষাঁড়ের উচ্চতা পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি। লম্বায় ৯ ফুট। ছবি: প্রথম আলো
ব্রাহামা জাতের এই ষাঁড়ের উচ্চতা পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি। লম্বায় ৯ ফুট। ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের বারোয়ারিতলা এলাকায় অসিত কুমার কুন্ডুর খামারে কিছুদিন আগেও বিভিন্ন জাতের ছোট–বড় ৩৬টি গরু ছিল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যেও প্রায় সব কটি গরু বিক্রি হয়েছে। শুধু রয়ে গেছে স্বাস্থ্যবান ‘আলীরাজ’। কাঙ্ক্ষিত দামের আশায় রয়েছেন অসিত কুমার। ১০ লাখ টাকায় প্রায় ৩০ মণ ওজনের এই ষাঁড় বিক্রি করতে চান তিনি।

অসিত কুমার ২০১৭ সালে স্থানীয় বাজার থেকে ব্রাহামা জাতের এই গরুটি কিনেছিলেন ৫৫ হাজার টাকায়। কেনার সময় গরুটির বয়স ছিল আট মাস। গরুটির স্বাস্থ্য ও শক্তি বিবেচনায় নিয়ে নাম রাখেন আলীরাজ। সেই আলীরাজের উচ্চতা এখন পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি। লম্বায় ৯ ফুট।

অসিত কুমার কুন্ডু পেশায় একজন কলেজশিক্ষক। দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার মাদিলার হাট কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষকতা করেন তিনি। শিক্ষকতার পাশাপাশি অনেকটা শখের বসে গরুর খামার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে খামারের পরিধি। বর্তমানে খামারে দুজন কর্মচারীও রেখেছেন।

গত বছরও ঈদের দিন কয়েক আগে আলীরাজকে ঢাকার গাবতলী গরুর হাটে নেওয়া হয়েছিল। অসিত কুমার সেই সময় আলীরাজের দাম হাঁকিয়েছিলেন ৯ লাখ টাকা। সেবার আট লাখ পর্যন্ত দাম উঠেছিল আলীরাজের। কিন্তু অসিত কুমার হাতছাড়া করেননি। কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় আবার ফেরত এনেছিলেন নিজের খামারে। অসিত কুমার জানান, প্রতিদিন আলীরাজের পেছনে খড়, ঘাস, ভাত, ডিম, ভুসি, খৈল, চিটাগুড়সহ ৬০০-৭০০ টাকা খরচ হয় তাঁর।

এবারও আলীরাজের দামের বিষয়টি অপরিবর্তনীয়ই রেখেছেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আলীরাজের দাম পাওয়ার বিষয়ে চিন্তায় পড়েছেন। পাইকারদের অনেকেই দেখে যাচ্ছেন। কাঙ্ক্ষিত দামের কাছাকাছিও কেউ যেতে পারছেন না। সর্বশেষ গত ৪ দিনে অন্তত ১০ জন পাইকার যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু দামে মিলছে না কারও সঙ্গে। মুঠোফোনে ছবি দেখে চট্টগ্রামের এক গরু ব্যবসায়ী দাম বলেছিলেন ৭ লাখ। পরে তিনিও আর যোগাযোগ করেননি।

অসিত কুমার বলেন, প্রতিদিন পাইকার আসছেন, দেখছেন। কিন্তু দামটা পাঁচ–ছয় লাখের মধ্যেই ওঠানামা করছে। ১০ লাখ টাকা দাম বললেই আলীরাজকে হাতছাড়া করবেন তিনি।