মানুষ আতঙ্কে, জীবিকার চিন্তায় অস্থির: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

দেশের মানুষ এখন মৃত্যু–আতঙ্কে ভুগছে এবং জীবিকার চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, যারা ক্ষমতায় আছে, তারা সচেতনভাবে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো হরণ করেছে।

প্রয়াত শাহজাহান সিরাজ স্মরণে আজ বুধবার দুপুরে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। ‘স্বায়ত্তশাসনের সংগ্রামকে স্বাধীনতাযুদ্ধে রূপান্তরে শাহজাহান সিরাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনস (বিএনআরসি)।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শাহজাহান সিরাজের সারাটা জীবনই দেশের জন্য সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গেছে। শাহজাহান সিরাজ এবং আজকে তাঁর স্মরণসভায় যাঁরা আছেন, তাঁরা এই বাংলাদেশ দেখতে চাননি। তিনি বলেন, শাজাহান সিরাজের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া, পরবর্তীকালে রাজনৈতিক নেতৃত্ব যখন একদলীয় সমাজের দিকে চলল এবং দুর্নীত-দুঃশাসন যখন একেবারে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল, দুর্ভিক্ষ দেখা দিল, তখন শাহজাহান সিরাজরা সেই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।

শাহজাহান সিরাজের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি শাহজাহান সিরাজকে শুধু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই না, তাঁকে সবাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী, স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন নায়ক হিসেবে দেখতে চাই।’

জেএসডির সভাপতি ও স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘১৯৬২ সালে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের গঠনের মধ্য দিয়ে প্রতিটা আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। ওই সময়ে নিউক্লিয়াসের সদস্যরা ছাড়া কেউই পৃথিবীতে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নই দেখেনি। আমি ও শাহজাহান সিরাজ ’৬২ সালে নিউক্লিয়াসের সদস্য। আমরা কোনো দিন স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন করিনি।’

আ স ম রব বলেন, ‘শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশে বেঁচে থাকবেন যত দিন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা থাকবে—সেটি হলো তেসরা মার্চ। সারা বাংলাদেশে সেদিন স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়েছিল, যেটা দোসরা মার্চ আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তোলন করেছিলাম। বলা হয়েছিল, তেসরা মার্চ পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে দিয়ে সারা দেশে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করতে হবে। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখে সিরাজুল আলম খানের নির্দেশে শাহজাহান সিরাজ স্বাধীনতা ইশতেহার পাঠ করেছিলেন।’

আলোচনায় আরও অংশ নেন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা নুরে আলম সিদ্দিকী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। বিএনপির নেতা ও সাবেক সাংসদ জহিরউদ্দিন স্বপন সভা পরিচালনা করেন।