ভারতীয় নারী জঙ্গির স্বীকারোক্তি

আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম
আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম

রাজধানীর মতিঝিল থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ভারতীয় নারী জঙ্গি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম (২৫)। তিনি ধর্মান্তরিত মুসলিম। আগে তাঁর নাম ছিল প্রজ্ঞা দেবনাথ।। আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই জবানবন্দি দেন। আসামির জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বলছে, এই ভারতীয় নারী জঙ্গি ও নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির অন্যতম সদস্য। চার দিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ।

ওমান প্রবাসী বাংলাদেশী আমির হোসেন সাদ্দামকে মুঠোফোনে বিয়ের পর বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আয়েশা গত বছরের অক্টোবরে চলে আসেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতা করছিলেন আয়েশা। নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী গ্রেপ্তার হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আয়েশা। তবে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের হুগলির ধনিয়াখালি থানা এলাকার পশ্চিম কেশবপুর গ্রামের মেয়ে আয়েশা। ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি ধর্মান্তরিত হন। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। এর একপর্যায়ে নব্য জেএমবির নারী শাখার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে।

তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুন ওরফে আসমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ হয় এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানান, তিনি ২০১৬ সাল থেকে ভারত থেকে নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করেন। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বও পালন করেছেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশে নাগরিক হওয়ার জন্য একটি ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরি করেন। ওই জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন।

কাউন্টার টেররিজমের কর্মকর্তারা বলছেন, আয়েশা দাওয়াতি কার্যক্রম এবং সদস্য সংগ্রহের কাজ করছিলেন। এ কাজে অনলাইনে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করতেন আয়েশা। সদস্যদের জন্য টাকা সংগ্রহ ও বিতরণের কাজও করেছেন।

সিটিটিসি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেছেন, আয়েশার কাছ থেকে তাঁরা বেশ কিছু কাগজপত্র পেয়েছেন। ওই কাগজপত্রগুলো যাচাই বাছাই এর জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের।