শেখ হাসিনা সব দুর্যোগ মোকাবিলায় সফল: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সব দুর্যোগ মোকাবিলায় সফল’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকেরা করোনা মোকাবিলায় সরকারের ব্যবস্থা বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরূপ মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব ও বিএনপি নেতারা একই সমালোচনার বাঁশি বহুদিন ধরেই বাজাচ্ছেন, তাঁদের কাছে একই ঢোলের আওয়াজ আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পৃথিবীতে যে কটি দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার খুব কম, তার মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। এমনকি ভারত, পাকিস্তানের চেয়েও বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুর হার অনেক কম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।’

বন্যা মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনার জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবরা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তাঁরা সঠিকভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারেননি। সেই ব্যর্থতা আমরা বারবার দেখেছি। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় তাঁদের ব্যর্থতা দেখেছি। তাঁদের সিদ্ধান্তহীনতা এবং ঘূর্ণিঝড়ের পরে সরকারের সঠিক কার্যক্রমের অভাবে লাখো মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল, হাজার কোটি টাকার সম্পদহানি হয়েছিল। তাঁদের আমলে ২০০৪ সালে বন্যার সময় দেশের মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করেছিল, ঢাকা শহরে সব জায়গায় পানি উঠেছিল। তাঁরা সেই বন্যাও সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেননি। তাঁরা যখনই ক্ষমতায় ছিলেন, কোনো দুর্যোগই সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেননি। অপর দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন, তাঁর বলিষ্ঠ, সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে সব সময় যেকোনো দুর্যোগ সঠিকভাবে মোকাবিলা করে দেখিয়েছেন এবং সেই সক্ষমতার জন্য তিনি আন্তর্জাতিকভাবেও নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৮ সালে দেশের ৭৫ ভাগ এলাকা পানির নিচে চলে গিয়েছিল, তিন মাস বন্যার পানি ছিল, বাংলাদেশে মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি। ২০০৭ সালের সিডর, ২০০৯ সালের আইলাসহ অনেক দুর্যোগের সফল মোকাবিলার কথা আপনারা জানেন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর গত সাড়ে ১১ বছরে বহুবার বন্যা হয়েছে, এ বছরও ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তখন কীভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করেছেন, মানুষকে ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করা, ঘূর্ণিঝড়–পরবর্তী সময়ে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে তাদেরকে রক্ষা করার দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন।’

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এবার বন্যায় অনেক প্রাণহানি হতে পারে—জাতিসংঘের এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বন্যা নিয়ে বসবাস করি। বন্যাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, বাংলাদেশের মানুষ সেটি জানে। বন্যা আমাদের নিত্যসঙ্গী। যেসব দেশ বন্যার সঙ্গে পরিচিত নয়, জাতিসংঘের পূর্বাভাস তাদের জন্য অবশ্যই সহায়ক। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বন্যা নিয়ে বসবাস করে, বন্যা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটি আমাদের জানা এবং আমাদের কাছ থেকে অনেকে বন্যা মোকাবিলা শিখতেও পারে।’

হাটহাজারী স্কুলে বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ উদ্বোধন করলেন তথ্যমন্ত্রী ও ভারতের হাইকমিশনার
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আলিপুর রহমানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণকাজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ভারতের হাইকমিশনার তাঁর কার্যালয় থেকে সভাপ্রধান হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে ভারতীয় সহায়তায় এ নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের দায়িত্বে থাকা অনিন্দ্য ব্যানার্জির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রী এ নির্মাণ প্রকল্প এবং ইতিপূর্বেও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে কথা আসে, তখনই আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের ঐতিহাসিক ভূমিকা, ভারতের জনগণ ও সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।’

রীভা গাঙ্গুলী দাশ তাঁর বক্তৃতায় শিক্ষা বিস্তারের কাজে যুক্ত হতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান। বিজ্ঞপ্তি