মির্জাপুরের কুমুদিনী চত্বরে বন্যার পানি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমসে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

উপজেলা সদরে লৌহজং নদের পাশে কুমুদিনী চত্বর অবস্থিত। গত কয়েক দিনে উজানের ঢল আর বৃষ্টির কারণে লৌহজং নদের পানি বেড়েছে। নদীর পাড় উঁচু থাকলেও কুমুদিনী চত্বরের পানিনিষ্কাশন নালার মাধ্যমে নদীর পানি ভেতরে ঢুকেছে। ফলে হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমস এলাকা প্রায় এক ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া কুমুদিনী মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের রাস্তাও প্লাবিত হয়েছে।

পানির কারণে চিকিৎসক ও নার্সদের বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিতে গিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের পানি মাড়িয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ যাতায়াতের সুবিধার্থে হাসপাতালের রাস্তায় ইট বিছিয়ে দিলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। পানির কারণে ওই ইটও ডুবে গেছে।

কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) অনিমেষ ভৌমিক জানান, তিন দিন আগে যখন পানি কুমুদিনী চত্বরে ঢুকছিল, তখন সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বন্যার পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় ভেতরে পানি ঢুকেছে। তবে এতে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমে কোনো বাধা সৃষ্টি হচ্ছে না।

এদিকে বন্যার কারণে মির্জাপুরের অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মির্জাপুর পৌরসভাসহ উপজেলার মহেড়া, ফতেপুর, জামুর্কী, আনাইতারা, বানাইল, ভাতগ্রাম, উয়ার্শী, গোড়াই, লতিফপুর ও তরফপুর ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মির্জাপুরের অর্ধেকের বেশি এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৯ হাজার ৭০০ দরিদ্র পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ হাজার পরিবারকে ইতিমধ্যে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, মির্জাপুরে কাঁচা-পাকা মিলিয়ে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পাকা সড়কসহ ১৫০ কিলোমিটার রাস্তা ডুবে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, মির্জাপুরের বংশাই ও লৌহজং নদের পানি পরিমাপের কোনো যন্ত্র না থাকলেও আশপাশে থাকা যন্ত্রগুলোর মাধ্যমে ধারণা করা হচ্ছে, মির্জাপুরে বিপৎসীমার প্রায় ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া নদ দুটি বিভিন্ন স্থানে ভাঙছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।