তারাগঞ্জের দুটি সড়ক বেহাল, দুর্ভোগ

তারাগঞ্জ–কিশোরগঞ্জ সড়কের তারাগঞ্জের ৮০০ মিটার অংশের এখন বেহাল অবস্থা। পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে। সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের মোড়ে। ছবি: রহিদুল মিয়া
তারাগঞ্জ–কিশোরগঞ্জ সড়কের তারাগঞ্জের ৮০০ মিটার অংশের এখন বেহাল অবস্থা। পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে। সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের মোড়ে। ছবি: রহিদুল মিয়া

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ ও কাশিয়াবাড়ি-তেরমাইল পাকা সড়ক দুটির দুই কিলোমিটার অংশ ভাঙাচোরা, খানাখন্দে ভরা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের এ বেহাল অবস্থার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানান, ২৪ বছর আগে নির্মিত তারাগঞ্জ বাজারের ভেতর দিয়ে যে ১১ কিলোমিটার একমাত্র পাকা সড়কটি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা সদরে চলে গেছে, সেই সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। বর্তমানে তারাগঞ্জের এক কিলোমিটার অংশ খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের ওই অংশে হাঁটুসমান পানি জমে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তারাগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে থানার মোড় পর্যন্ত সড়কের ওই অংশে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। পানি জমে থাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ ও খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের।

থানাপাড়া গ্রামের ইজিবাইকচালক মনছুর হোসেন বলেন, ‘ভাইজান, এটা সড়ক না, ডোবা? এই আস্তাটা দিয়্যা খালি গাড়ি নিয়্যা যাইতে এল্যা কষ্ট হয়।’
তারাগঞ্জ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, সড়কটির এ অবস্থার কারণে ব্যবসায়ী-পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাটের দিন ক্রেতাদের তারাগঞ্জ হাটে কেনাকাটা করতে আসতে সমস্যা হচ্ছে। বিভিন্ন পত্রিকায় রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কথা ছাপা হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি। বর্তমানে কাদাপানি পেরিয়ে পথচারীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে।

তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ সড়কের মতোই বেহাল অবস্থা কাশিয়াবাড়ি-তেরমাইল সড়কটির। চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তাটি দিয়েও হাড়িয়ারকুঠি ও ইকরচালী ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে। বর্তমান রাস্তাটির বরাতি থেকে তেরমাইল পর্যন্ত এক কিলোমিটার পাকা অংশ খানাখন্দে ও গর্তে ভরে যাওয়ায় যান চলাচল তো দূরের কথা, সাধারণ মানুষের হেঁটে চলাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পালপাড়া গ্রামের গ্রামের ভ্যানচালক বিমল চন্দ্র পাল বলেন, ‘বরাতি-তেরমাইল এক কিলোমিটার রাস্তা কোনার জন্য হামাক কষ্ট ভোগবার নাগোছে। একনা দিয়া ভ্যান চলেবার সময় পেটের নাড়িভুঁড়ি নরে। ভ্যান কোনারও ক্ষতি হয়। এই রাস্তা কোনা ঠিক করলে ক্ষতি কী হয়।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী হায়দার জামান বলেন, ‘কাশিয়াবাড়ি-তেরমাইল রাস্তার এক কিলোমিটার পাকা অংশের বেহাল অবস্থার কথা জানা আছে। বরাদ্দ পেলে এটি সংস্কার করা হবে।’

ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ সড়কটির এক কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য সওজের রংপুর কার্যালয়কে গত বছর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো সড়কটি সংস্কার না করায় দুই উপজেলার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সওজের রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম সফিকুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় এটি সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পথচারীদের দুর্ভোগ দূর করতে তারাগঞ্জ বাজার এলাকায় ৩৭০ মিটার অংশ হেরিংবোন বন্ড করে দেওয়া হয়েছে।