সেতুতে উঠতে দীর্ঘ সাঁকো পারের কসরত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর-পরমানন্দপুর সড়কের সুতার খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি গ্রামবাসীর তেমন কাজে লাগছে না। সেতুতে উঠতে সংযোগ সড়কের ওপর নির্মিত দুই শ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো পার হতে হয় গ্রামবাসীর। সম্প্রতি তোলা ছবি। বদর উদ্দিন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর-পরমানন্দপুর সড়কের সুতার খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি গ্রামবাসীর তেমন কাজে লাগছে না। সেতুতে উঠতে সংযোগ সড়কের ওপর নির্মিত দুই শ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো পার হতে হয় গ্রামবাসীর। সম্প্রতি তোলা ছবি। বদর উদ্দিন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের সুতার খালের ওপর আড়াই বছর আগে নির্মাণ করা হয় একটি সেতু। কিন্তু সেতুতে ওঠার জন্য সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা হয়নি। এ অবস্থায় স্থানীয় ব্যক্তিরা সেতুতে ওঠার জন্য বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। অনেক কৌশল করে দীর্ঘ এই সাঁকো পার হতে হয়। নইলে পা ফসকে পানিতে ডোবার ও হতাহত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর-পরমানন্দপুর সড়কটি সরাইল-অরুয়াইল সড়কের পাশে অবস্থিত। ভূইশ্বর বাজারটি গড়ে উঠেছে এই সড়কের পাশে। এই সড়ক ও বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতার খাল। বাজার ও সরাইল-অরুয়াইল সড়কে যেতে সুতার খাল পার হতে হয় ভূইশ্বর গ্রামবাসীকে।

স্থানীয় লোকজন ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সূত্র জানায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) মাধ্যমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সুতার খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয় ৩২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এখনো ওই সেতুর সংযোগ সড়কসহ গ্রামীণ সড়কটি নির্মাণ করা হয়নি। সড়কটি বছরের পাঁচ মাস থাকে পানির নিচে। এতে গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। গ্রামবাসী বাধ্য হয়ে গ্রামীণ সড়কের ওপর কয়েক বছর ধরে প্রায় ২০০ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করছেন।

ভূইশ্বর গ্রামের বাসিন্দা কাশেম মিয়া (৪০) বলেন, ‘সুতার হালের (খাল) ওফর কয়েক বছর আগে ব্রিজ অইছে। কিন্তু আমরার কোনো কাজে লাগে না। আমরা এহানে সড়ক চাই।’

স্থানীয় লোকজন জানান, গ্রামের প্রবেশমুখে পাকা সেতু নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় বছরের কোনো সময়ই গ্রামের ভেতরে রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ কোনো যানবাহন নিয়ে আসা যায় না। ফলে কৃষিপণ্যের পরিবহন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাঁদের। রোগী, অন্তঃসত্ত্বা ও নবজাতকদের নিয়ে পারাপার হতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। আর বিদ্যালয়গামী ছোট শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকে সব সময়।

পাকশিমুল ইউপির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ভূইশ্বর সেতুর পর থেকে যে গ্রামীণ সড়ক আছে, তা মাটি দিয়ে নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

উপজেলা পিআইও সাইফুল ইসলাম জানান, ওই সেতুর সংযোগ সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, শিগগিরই এর জন্য অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাবে।

সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর জানান, বর্ষা মৌসুম শেষ হলে সংযোগ সড়কসহ ওই গ্রামের রাস্তায় মাটি ফেলার কাজ শুরু হবে।