আগে তো করোনা থেকে বাঁচি: স্বাস্থ্যের ডিজি

আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম
আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম

সদ্য নিয়োগ পাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, কাজের ক্ষেত্রে আগে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দেবেন, এরপর স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি দমন।

আজ সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্য খাত ঘিরে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ, পাশাপাশি করোনোভাইরাস মহামারিও চলছে। কোনটা আগে নিয়ন্ত্রণে প্রাধান্য পাবে, জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘মহামারিই প্রাধান্য পাবে এখন। আগে তো বাঁচি। মহামারি সামাল দিয়ে আগে বাঁচার ব্যবস্থা করতে হবে।’

ভিআইপিসহ বিশেষ ব্যক্তিরা চিকিৎসা করতে হলে দেশের বাইরে চলে যান। মহাপরিচালক এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন আনতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘ব্যক্তিগত ইচ্ছারও একটা ব্যাপার আছে। আমি আমার দেশকে কতটুকু ভালোবাসি। আমি একজন সার্জন। কিন্তু আমি আমার পিত্তথলির অপারেশন বিদেশে করাইনি। মফস্বলে আমার বন্ধুরা যেখানে আছে, সেখানে গিয়েছি। এটা মানুষের আস্থার, বিশ্বাসের ব্যাপার। এখানে যাঁরা ভিআইপি, তাঁদের মানসিকতার পরিবর্তন তো স্বাস্থ্য বিভাগ করতে পারবে না। এটা আপনার দেশকে আপনার ভালোবাসতে হবে।’

স্বাস্থ্য খাতের আস্থা ফেরানোর জন্য যা যা করণীয়, তা–ই করা হবে জানিয়ে আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান।
করোনা মোকাবিলায় আগের পরিকল্পনা থাকবে, নাকি নতুন করে পরিকল্পনা করা হবে, এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, জাতীয় পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া করোনার বিষয়ে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন জিনিস জানা যাচ্ছে। রোগটা এখনো অজানা। আগের পরিকল্পনা রেখেই প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে।

নতুন দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার আগে গত শনিবার নতুন মহাপরিচালক বলেছিলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির দায় সবার। তাঁর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে আজ জানান, প্রত্যেক মানুষের সততাই দুর্নীতির মাপকাঠি। ব্যক্তিকে সৎ হতে হবে।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৮ জন কর্মকর্তাকে বদলির কারণ হিসেবে জানতে চাইলে নতুন মহাপরিচালক বলেন, এটার প্রক্রিয়া অনেক দিনের ছিল। আজ অর্ডার হয়েছে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, যখন যেখানে চাহিদা হয়, সেখানে বদলি করা হয়। বসুন্ধরায় একটি করোনা হাসপাতাল করা হয়েছিল। কিন্তু এখন হাসপাতালে রোগী কম। তাই সেখান থেকে ওই চিকিৎসকদের নিয়ে যেখানে রোগী বেশি, সেখানে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগের মহাপরিচালক কয়েক দিন না থাকায় বদলির আদেশে সই করা হয়নি। পরে একবারে অনেকের আদেশ সই হয়েছে।

আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম স্বাস্থ্য খাতে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেই কাজ করার চেষ্টা করবেন। এ ছাড়া জানান, করোনা আক্রান্তদের কাছে ও বন্যাদুর্গতের কাছে স্বাস্থ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি এখন কাজ করতে চান।

হাসপাতালের লাইসেন্স প্রসঙ্গে নতুন মহাপরিচালক বলেন, সুনির্দিষ্ট করে তাঁকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া আছে। অধিদপ্তর কী করছে, তা সামনে দেখা যাবে। এ ছাড়া বিদেশে যেতে করোনা পরীক্ষার জন্য ওয়ান–স্টপ সার্ভিস চালুর বিষয়টিও দেখবেন বলে জানান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর সম্মান এবং নিজেদের সম্মানও যেন থাকে, সে লক্ষ্যে কাজ করবেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করে এগিয়ে যেতে চান। এ ছাড়া বলেন, করোনা ও বন্যার দুর্যোগ মোকাবিলা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক সানিয়া তহমিনা।