নজির স্থাপন করলেন রেলওয়ের শ্রমিক-প্রকৌশলীরা

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত হওয়া একটি কোচ। আজ মঙ্গলবার এটি হস্তান্তর করা হয়। ছবি: প্রথম আলো
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত হওয়া একটি কোচ। আজ মঙ্গলবার এটি হস্তান্তর করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

ঈদের আগে তিন মাসের কাজ দুই মাসে সেরে নজির স্থাপন করেছেন দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিক–প্রকৌশলীরা। করোনাকালে জুন থেকে জুলাই মাসে রেকর্ড পরিমাণ ১০২টি কোচ মেরামত করা হয়। আজ মঙ্গলবার সর্বশেষ কোচটি রেলের পরিবহন বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কারখানা সূত্র জানায়, করোনাকালে সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি সাধারণ ছুটির আওতায় পড়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। তবে ৩১ মে থেকে পুনরায় সীমিত পরিসরে চালু করা হয় এর উৎপাদন। এ অবস্থায় কারখানায় জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ১০১টি কোচ। কিন্তু শ্রমিক-প্রকৌশলীদের নিষ্ঠার কারণে মাত্র দুই মাসেই ১০২টি কোচ মেরামত হয় কারখানায়, যা নজিরবিহীন।

একই সূত্র জানায়, কোনো ধরনের ওভারটাইম (অতিরিক্ত কাজের মজুরি) ছাড়াই টানা কাজ করেছেন সবাই। কারখানার সাধারণ কার্যকাল সকাল সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত। এর মাঝে দুপুরে এক ঘণ্টা খাবারের বিরতি। সে ক্ষেত্রে সকাল থেকে বিরতিহীন বেলা দুইটা পর্যন্ত কাজ করে রেকর্ডসংখ্যক উৎপাদন দিতে সক্ষম হয়েছে কারখানাটি। এ সময় ৭৮টি ব্রডগেজ (বড়) ও ২৪টি মিটারগেজ (ছোট) মেরামত করা হয়।

শ্রমিক-প্রকৌশলীদের নিষ্ঠার কারণে ১০২টি কোচ মেরামত সম্ভব হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
শ্রমিক-প্রকৌশলীদের নিষ্ঠার কারণে ১০২টি কোচ মেরামত সম্ভব হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

কারখানার প্রশাসন বিভাগ জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ২৯টি উপকারখানায় (শপ) পদ রয়েছে ২ হাজার ৮৩৩টি, এর বিপরীতে কর্মরত মাত্র ৮৪১ জন শ্রমিক-কর্মচারী। ৩০ ভাগের নিচে জনবল নিয়ে এ বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে কারখানাটি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কারখানার কার্যব্যবস্থাপক (ডব্লিউএম) শেখ হাসানুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাভাবিক রেল যোগাযোগ বজায় রাখতে করোনাকালেও উৎপাদন ঠিক রেখেছি। আমরা উৎফুল্ল যে আমাদের শ্রমিকেরা দেশপ্রেমিক। তাঁদের রয়েছে কাজের প্রতি একাগ্রতা। তাই ঈদের আগেই তিন মাসের কাজ মাত্র দুই মাসে সম্পন্ন করে তাক লাগাতে পেরেছেন তাঁরা।’

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মো. জয়দুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাপারটি সত্যি বিস্ময়কর। প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি আছে বলেই আমরা একটা বড় কাজকে বাস্তবতায় রূপ দিতে পেরেছি। আমাদের কারখানায় লোকবল জোগানসহ সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করা সম্ভব হলে আরও বেশি বেশি কাজ করতে পারব বলে আশা রাখি।’