কলেজের অনুমতি ছাড়াই মাঠে গরুর হাট, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও

নিয়ম ভঙ্গ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে বসেছে গরুর হাট। উপরন্তু হাটে স্বাস্থ্যবিধির কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
নিয়ম ভঙ্গ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে বসেছে গরুর হাট। উপরন্তু হাটে স্বাস্থ্যবিধির কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে আজ মঙ্গলবার গরুর হাট বসেছে। এর ওপরে হাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধির কোনো নিয়মকানুন। হাটে আগত কারও মাস্ক পরা নেই, এমনকি নেই সামাজিক দূরত্বের বালাই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. ইকরাম উল্লাহ বলেন, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সীমিত আকারে গরুর হাট বসার কথা রয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাটে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। হাট মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে প্রশাসন, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বাজার ইজারাদার। তিনি বলেন, গরুর হাটে এভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানা হলে করোনা সংক্রমণের হার ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাবে।

আগামী ১ আগস্ট পবিত্র ঈদুল আজহা। এ কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর হাট বসানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ আখাউড়া উপজেলা সদরে গরুর বাজারে গরুর হাট বসার কথা থাকলেও হাট বসেছে আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো ধরনের গরুর হাট বসা নিষেধ রয়েছে। ওই কলেজ মাঠে গরুর হাট বসলেও এ জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।

আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কলেজ মাঠে গরুর হাট বসানো জন্য আমাদের কাছে কেউ কোনো আবেদন করেনি। তবে শুনেছি, ইউএনওর কাছে আবেদন করেছে। ইউএনও জনস্বার্থে কলেজমাঠে গরুর হাট বসার অনুমিত দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, গরুর হাটে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। কেউ কারও কথা শুনছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখাউড়া বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গরুর হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাঁরা কেউ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না। আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবউদ্দিন বেগ বলেন, গরুর বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহাম্মদ নিজামী বলেন, তিনি নিজেসহ পুলিশ গরুর হাটে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরু কেনাবেচা করার জন্য বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের বিষয়ে তিনি বলেন, গরুর হাটে ৩০-৪০ হাজার ক্রেতা-বিক্রেতা। কে কার কথা শোনে, সবাই গরু কেনা নিয়ে ব্যস্ত। তারপরও পুলিশ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর হাটে বেচাকেনা করার জন্য ইজারাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠকে যোগদান করায় গরুর হাট ওসিসহ স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনকে স্বাস্থ্যবিধি দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’ তিনি বলেন, আগের হাটেও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছিল।