লাক্কাতুরা চা-বাগানে পশুর হাট বন্ধের আদেশ আদালতের

তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ক্ষতির আশঙ্কা করে লাক্কাতুরা চা-বাগানে সরকারি উচ্চবিদ্যালয় আঙিনায় সিলেট সদর উপজেলার অস্থায়ী পশুর হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

আজ বুধবার হাইকোর্টের ভার্চ্যুয়াল আদালতে জনস্বার্থে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চের বিচারক তারিক-উল হাকিম হাট বন্ধ করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে চা-বাগান এলাকার উচ্চবিদ্যালয় আঙিনা থেকে হাটের সব স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর জনস্বার্থে ভার্চ্যুয়াল রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাট বন্ধের এই আদেশ হয়। বেলা আড়াইটার দিকে আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মহামারির এই পরিস্থিতিতে হটস্পট তৈরি হয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এই রিট করেছেন। এ ছাড়া বিদ্যালয় আঙিনা বাণিজ্যিক কোনো কাজে ব্যবহার না করার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও নির্দেশনা রয়েছে। তাঁর আবেদন আমলে নিয়ে আদালত হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষরিত হাটের ইজারা দেওয়ার নোটিশ স্থগিত করেছেন।

আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালতের এই আদেশ অস্থায়ী হাট ইজারাদাতা ইউএনওসহ সিলেট মহানগর পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে ইউএনও কাজী মহুয়া মমতাজের মুঠোফোনে বেলা সাড়ে তিনটা ও বিকেল চারটায় কল দিলে তিনি দুবারই ফোন কেটে দেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অধীন ৬টি থানায় কোরবানির পশুর বৈধ হাট ১০টি। এই ১০টি হাটের মধ্যে লাক্কাতুরার হাটও আছে। আদালতের আদেশে হাট বন্ধ রাখার বিষয়টি তাঁরা এখনো অবহিত নন।

সিলেট নগরীর উপকণ্ঠে লাক্কাতুরার আশপাশের আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা বলেছেন, লাক্কাতুরা চা-বাগানের ভেতর বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর–বেষ্টিত আঙিনায় বসানো এই হাট নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও লাক্কাতুরা চা-বাগান কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। একই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতির আশঙ্কায় সিলেট নগরীর এমসি কলেজ মাঠ ও সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠ থেকে অস্থায়ী হাট স্থগিত করে সিলেট সিটি করপোরেশন। কিন্তু সদর উপজেলা পরিষদ হাট বসানোর প্রস্তুতিতে অনড় ছিল। এ নিয়ে ২৫ জুলাই প্রথম আলোয় ‘এক হাটে তিন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ক্ষতির আশঙ্কা’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোকে নিয়ে লাক্কাতুরায় প্রতিবাদী অবস্থান ও মানববন্ধন করে।