'মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ধন্যবাদ'

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত নমুনা সংগ্রহকারী ২১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে ধন্যবাদ জানানো হয় ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয় বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে। ছবি: প্রথম আলো
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত নমুনা সংগ্রহকারী ২১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে ধন্যবাদ জানানো হয় ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয় বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে। ছবি: প্রথম আলো

‘নমুনা সংগ্রহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছেন জেলার মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। শ্রদ্ধার সঙ্গেই আপনাদের নামগুলো নিচ্ছি। আপনাদের ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। আপনারা একেকজন একেকটি ইতিহাস। আপনাদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানাই। করোনার সংক্রমণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের পাশে আছি।’

বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত নমুনা সংগ্রহকারী ২১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে (ল্যাব ও ইপিআই) ধন্যবাদ ও আর্থিক প্রণোদনা অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান।

দেশে এই প্রথম করোনার নমুনা সংগ্রহকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের (ল্যাব ও ইপিআই) ধন্যবাদ ও আর্থিক প্রণোদনা দিতে আমন্ত্রণ জানাল কোনো জেলার প্রশাসন। তাঁদের ধন্যবাদ জানানো শেষে সন্ধ্যার দিকে জেলায় নমুনা সংগ্রহকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের প্রণোদনা দেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান। মূলত তাঁদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ধন্যবাদ জানাতেই এই উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে নমুনা সংগ্রহকারী জেলার ২১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হয়।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জেলায় করোনা সংক্রমণের শুরুর সময় থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছি। করোনায়ও আক্রান্ত হয়েছি। পজিটিভ হওয়ার অনুভূতি আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ বলতে পারবে না। ২৬ বছর ধরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদে চাকরি করছি। এভাবে কেউ কোনো সভায় ডাকেনি। সম্মান দেয়নি। জেলা প্রশাসক স্যারকে ধন্যবাদ।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, ‘মনোবল হারালে চলবে না। যত দিন না করোনা যায়, আমরা মাঠে কাজ করব।’

সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, কাজের স্বীকৃতি অনুপ্রেরণা জোগায়। এ উদ্যোগের জন্য জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানান তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিরাপত্তা বজায় রেখে কাজ করছেন। কিন্তু নমুনা সংগ্রহকারীদের নিরাপত্তা বজায় রাখার সুযোগ কম। তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। দেশপ্রেম আছে বলেই তাঁরা কাজটি সুন্দরভাবে কাজটি করছেন।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, ‘জেলায় প্রায় পাঁচ মাসে ২৪ হাজার নমুনা সংগ্রহ করেছেন আপনারা ২১ জন। আপনারা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছেন। নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন আপনারা। করোনা শেষ হওয়ার পর আপনারা এসব স্মৃতি অন্যদের বলতে পারবেন। আমরা চেষ্টা করছি, কীভাবে নমুনা সংগ্রহ আরও বাড়ানো যায়। করোনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আপনাদের পাশে আছি।’